নরকের দরজা বা হেল ডোর এর নাম অনেক শুনেছেন। বিশ্বের ভয়ঙ্কর স্থানগুলোর অন্যতম হলো এটি। শরীরে কাঁটা দেয়ার মতই একটি জায়গা। বিশাল গোলাকার এক গর্ত। প্রায় ৫০ বছর ধরে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। দেখে মনে হয় এই গর্ত দিয়েই বুঝি প্রবেশ করতে হয় নরকে! পৃথিবীর বুকে নরকের এক ঝলক দেখতে সেখানে ভিড় জমায় পর্যটকরা।
তুর্কমেনিস্তানের দারভাজা নামের একটি এলাকায় এই জায়গাটি অবস্থিত। ‘দারভাজা গ্যাস ক্র্যাটার’ নামের স্থানটি পর্যটকদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। ‘নরকের দরজা’ নামের বিশাল এই গর্তটি ২ বছর আগে বন্ধের নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত সেটি বন্ধ করার কোন উপায় খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা। সূত্র: মেট্রো
‘নরকের দরজা’খ্যাত এ জায়গাটি তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী থেকে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। গর্তটি ১৯০ ফুট প্রশস্ত এবং ৭০ ফুট গভীর। গর্তটি প্রথম ১৯৭১ সালে সৃষ্টি হয়েছিল। সোভিয়েত ভূতাত্ত্বিকেরা বিশাল কারাকুম মরুভূমিতে একটি প্রাকৃতিক গ্যাসের গর্ত খনন অভিযানের সময় এটি সৃষ্টি হয় বলে অনেকের বিশ্বাস। পরে তাঁরা দাবি করেন, ভুলবশত এটি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর সঠিক কারণ কেউ বলতে পারেননি। স্থানীয় ভূতাত্ত্বিকদের ধারণা, ১৯৬০ সালের দিকে এই গর্ত তৈরি হয় এবং ১৯৮০ সাল থেকে এখানে আগুন জ্বলতে শুরু করে।
২০১০ সালে এই গর্তের আগুন নেভানোর নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির তখনকার প্রেসিডেন্ট বেরদিমুখামেদভ। ২০২২ সালে আবারও স্থানটি চিরদিনের জন্য বন্ধের নির্দেশ দেন বেরদিমুখামেদভ। তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমির বুকে গর্তের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলা ওই আগুন নিভিয়ে ফেলারও নির্দেশ দিয়ে তিনি জানান, দারভাজার প্রাকৃতিক গ্যাসের আগুনের মুখ বন্ধ করতে চান তিনি।
স্থানীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেক মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ হারাচ্ছি। এই সম্পদ থেকে আমরা উল্লেখযোগ্য মুনাফা অর্জন করে জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারি।’ প্রেসিডেন্ট বলেন, এ আগুনের কারণে, পরিবেশ ও এর আশপাশে বসবাস করা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মধ্য এশিয়ার দেশটি প্রাকৃতিক গ্যাসে স্বয়ংসম্পূর্ণ। গ্যাস থেকেই দেশটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় হয়।
তুর্কমেনিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীকে আগুন নেভাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগুন নেভাতে বিজ্ঞানীদের একত্র করতে বলা হয়েছে তাকে। প্রয়োজনে বিদেশি পরামর্শকদের সাহায্য নিয়ে এর সমাধান বের করতে বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :