‘সবাই বলে বিজেপি মুসলমানদের বিরুদ্ধে, কিন্তু আমি বলি বিজেপি মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে একদমই নয়। আপনারা দেখুন কোথায় বিজেপি মুসলিমবিরোধী?’ এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী।
পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দরজিৎ সিং আহলুওয়ালিয়ার সমর্থনে রোড শো করেন মিঠুন চক্রবর্তী। রোড শো চলাকালীন হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন মহাগুরু। মাঝপথে রোড শো শেষ করে আসানসোলের একটি হোটেলে ওঠেন মিঠুন চক্রবর্তী ও বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দরজিৎ সিং আহলুওয়ালিয়া। সেই হোটেলে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়েই এমন মন্তব্য করেন পদ্মভূষণ পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী।
আসানসোলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। আপনিও একজন অভিনেতা, সেখানে বিজেপির লড়াইটা কতটা কঠিন হবে? এমন প্রশ্ন করা হলে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, আমি কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। একটাই কথা, আমাদের যে প্রার্থী ছয়বারের সংসদ সদস্য, তিনি খুবই সৎ ব্যক্তি। কারণ বিজেপি এমন একটি দল যারা কাউকে প্রার্থী করার আগে একটা নিয়মের মধ্যে গিয়ে তারপর প্রার্থী ঘোষণা করে।
মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, আপনাদের কি মনে হয় বিজেপি দুর্নীতিগ্রস্ত দল? কয়লা, বালি চুরি করে? করে না। সন্দেশখালীতে নারীদের ওপর অত্যাচার করে না, রেশন চুরি করে না, বিদ্যা চুরি করে না।
মিঠুন চক্রবর্তী শত্রুঘ্ন সিনহাকে নিয়ে বলেন, তিনি আমার একজন কলিগ, আমাদের মধ্যে বেশ সুসম্পর্ক। রাজনীতি করি বলে সবকিছু ভুলে গিয়ে নোংরামি করতে হবে, সেটা আমার রাজনীতি নয়। যারা চামচাগিরি করে তারাই এ ধরনের নোংরা রাজনীতি করে। আমি করি না। যদি রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে হয় তাহলে বলব বিজেপির প্রার্থী সুরিন্দরজিৎ সিং আহলুওয়ালিয়া সৎ এবং একদম সঠিক ব্যক্তি। কিন্তু উনি (শত্রুঘ্ন সিনহা) একসময় বিজেপির সমর্থক ও সংসদ সদস্য ছিলেন। রাজনীতি নিয়ে অনেক বেশি জ্ঞান রাখেন; তবে উনি ভুল দলকে বেছে নিয়েছেন। একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দলকে উনি বেছে নিয়েছেন। আজ নয়তো কাল এ দুর্নীতির দায় উনাকেও নিতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী সম্প্রতি মিঠুন চক্রবর্তীকে গাদ্দার বলে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, উনি একজন গাদ্দারি। আমি গাদ্দার হলে উনি গাদ্দারি।
এদিকে ঘাটালে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অভিনেতা দীপক অধিকার (দেব) বলেন, মিঠুন তার বাবার মতো, যদি মিঠুন চক্রবর্তীর কিডনির প্রয়োজন হয় তাহলেও তিনি দিতে রাজি আছেন। এ বিষয়ে মিঠুন বলেন, এটাই সৌজন্য, দেবের বাবার খাদ্য সরবরাহের ব্যবসা ছিল। বড় বড় প্রোডাকশন হাউজে খাবার সাপ্লাই করতেন দেবের বাবা। আমার জন্য প্রত্যেকবার স্পেশাল কিছু বানিয়ে আনত। তখন তো ও ছোট্ট বাচ্চা ও তো ঠিকই বলেছে ওর বাবার মতো আমি।
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষের কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন ওই নর্দমার কীটের কথা একদম আমার সামনে বলবেন না। এরপর মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, তীব্র দাবদাহে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন আমাকে দেখার জন্য কিন্তু আমার শরীর হঠাৎ করে খারাপ হতে থাকে আমার পা কাঁপতে থাকে সে কারণেই রোড শো মাঝপথে শেষ করে চলে আসতে হয়। এখানে বিজেপির কোনো ভুল নেই, সব ভুল আমার। কারণ আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।
এর পরের বাকি দফার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে কি আপনি সুস্থ নির্বাচন আশা করছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, আমি একদমই আশা করছি না সুস্থ নির্বাচনের। এরা একটা সহিংসতার মতো ঘটনা ঘটাবেই। আমি সব বিজেপির কর্মকর্তাকে বলবো, যেখানেই তৃণমূল কংগ্রেসের অফিস আছে, মিটিং হবে সেখান থেকে ১ থেকে ২ কিলোমিটার দূরে। কারণ এরা বাহানা খুঁজছে। আর ম্যাডামের (মমতার) জনসভা হলে সেখান থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে থাকতে হবে। যখন ওনার মাথায় আঘাত লাগলো তখন আমি ভেবেছিলাম এই রে এবার বলবে বিজেপি পেছন থেকে ধাক্কা মেরেছে, কিন্তু সেটা হয়নি। এরপর হেলিকপ্টারে যেই পড়ে গেলো তখন আমি মনে করেছিলাম এবার না বলে বসে এই পাইলটটা বিজেপির। আমি সবসময় আতঙ্কে থাকি। তবে সব সময় উনি চেষ্টা চালিয়ে যাবেন কোনো রকমে সহিংসতার মতো ঘটনা ঘটুক যাতে বিজেপির ওপর দোষটা চাপিয়ে নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়া যায়।
একুশে সংবাদ/জা. নি./ এসএডি/
আপনার মতামত লিখুন :