৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ নিয়ে বেশ বড়সড় ঝামেলাতেই পড়েছে মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। কারিগরি ত্রুটির কারণে সারা বিশ্বে এই মডেলের সব উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করার পরামর্শের পর থেকে নতুন করে এই ঝামেলার শুরু। এ নিয়ে এবার তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন সংস্থা দ্য ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)।
এর আগে উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি এফএএকে জানায়, ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের পর্যবেক্ষণ ঠিকঠাকমতো হয়নি। এরপরই এই তদন্ত শুরুর ঘোষণা দিল উড়োজাহাজ পর্যবেক্ষণ সংস্থাটি। এফএএ বলছে, পর্যবেক্ষণের সময় সংশ্লিষ্টরা কোনো ভুল করেছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের পাখা নিয়ে পর্যবেক্ষণ ঠিকঠাক হয়নি বলে জানিয়েছিল বোয়িং। সোমবার এ নিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে দ্য ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)। তাতে বলা হয়, এ ব্যাপারে গত মাসেই তাদের জানিয়েছে বোয়িং।
আসতে পারে বিশ্বজুড়ে বোয়িং ড্রিমলাইনার না ওড়ানোর সিদ্ধান্তআসতে পারে বিশ্বজুড়ে বোয়িং ড্রিমলাইনার না ওড়ানোর সিদ্ধান্ত
সোমবারের বিবৃতিতে এফএএ জানায়, উৎপাদনে থাকা সব ড্রিমলাইনার আবারও বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ ও যাচাইবাছাই শুরু করেছে বোয়িং। এ ছাড়া যেসব ড্রিমলাইনার পরিষেবায় রয়েছে, তা নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করতে হবে তাদের। শুরু হওয়া তদন্তে কিছু পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দ্য ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের এই বিবৃতির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি বোয়িং। তবে, তারা একটি ইমেইল শেয়ার করেছে। ইমেইলটি একজন নির্বাহী কর্মকর্তা সাউথ ক্যারোলাইনার কর্মীদের পাঠিয়েছেন। তাতে ড্রিমলাইনার নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। তবে, কোনো ঝুঁকি নেই বলে ইমেইলে জানানো হয়।
ইমেইলটি পাঠান বোয়িং ৭৮৭ প্রোগ্রামের প্রধান স্কট স্টোকার। তিনি ইমেইলে লেখেন, ‘অনেকেই ঠিকঠাক কাজ না করে প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা ভঙ্গ করছেন। ব্যাপারটি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এ নিয়ে পর্যবেক্ষণও করেছি। এরই মধ্যে এসব পর্যবেক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে।’
ড্রিমলাইনারের উৎপাদন কমার আশঙ্কায় বোয়িং ড্রিমলাইনারের উৎপাদন কমার আশঙ্কায় বোয়িং
গত জানুয়ারিতে আলাস্কায় ফ্লাইট চলাকালীন বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের একটি উড়োজাহাজের দরজায় বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনার পর বোয়িংয়ের নিরাপত্তার মান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা। ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করে।
নিরাপত্তা ত্রুটি বুঝতে পেরেই বোয়িং কোম্পানি ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের উৎপাদন কমিয়েছে বলে ধারণা করছেন অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা। এ ব্যাপারটিও আমলে নিয়েছে এফএএ। এই ত্রুটি প্রমাণিত হলে, বিশ্বজুড়ে ১১ শর বেশি ড্রিমলাইনার না ওড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
বোয়িংয়ের ড্রিমলাইনার গ্রাউন্ডেড করার পরামর্শ সাবেক প্রকৌশলীর বোয়িংয়ের ড্রিমলাইনার গ্রাউন্ডেড করার পরামর্শ সাবেক প্রকৌশলীর
সম্প্রতি ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের কারিগরি ত্রুটির কথা সামনে এনে আলোচিত হয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রকৌশলী স্যাম সালেহপর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের কাছে তিনি দাবি করেছেন, ‘উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে উড়োজাহাজগুলোর অনেক ক্রটিকে পাত্তা দেওয়া হয়নি।’
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :