রাশিয়ার আক্রমণের শিকার ইউক্রেনের সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি একটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ইতালিতে চলমান বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭ সম্মেলনের ফাঁকে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর এনবিসি নিউজের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চুক্তির পাশাপাশি জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদের সুদ থেকে প্রতিবছর ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারেও একমত হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার নির্বাহী আদেশে হওয়া এই চুক্তির বিষয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা আমাদের সমর্থন (ইউক্রেনের ওপর থেকে) সরিয়ে নিচ্ছি না। প্রকৃতপক্ষে, আমরা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে অবৈধ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’ এ সময় সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে দীর্ঘ কয়েক মাসের আলোচনার পরম এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। এই চুক্তি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে ১০ বছরের জন্য প্রশিক্ষণ, অস্ত্র উৎপাদনে সহযোগিতা বৃদ্ধি, সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে এবং গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে। তবে এই চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে হতে যাওয়া চুক্তি, যা পরবর্তী যেকোনো প্রেসিডেন্ট চাইলে না-ও মানতে পারেন।
এদিকে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ নিজ স্বার্থে বিশেষ করে ইউক্রেনের জন্য ব্যবহারে সম্মত হয়েছে জি-৭। এমনটাই উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাব অনুসারে, রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো প্রতিবছর ইউক্রেনের জন্য পাঁচ হাজার কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহ করবে জোটটি। এর মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলার পরিকল্পনা করেছে জোটটি।
প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুসারে—রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা জি-৭ ভুক্ত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে থাকা ৩২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সম্পদের সুদ থেকে প্রাপ্ত অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ আকারে দেওয়া হবে। রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা দেশগুলো পর্যায়ক্রমে এসব সম্পদ জব্দ করে।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে, কোনো দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা সম্পত্তি ইউক্রেনকে দিতে পারবে না। কিন্তু জি-৭ যদি এই পরিকল্পনা পাশের পর সরাসরি না দিলেও সেই সম্পদ থেকে অর্জিত সুদ ইউক্রেনকে দেওয়া সম্ভব হবে, যা দেশটিকে রণক্ষেত্রে দারুণ সুবিধা দেবে।
একুশে সংবাদ/যু.র/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :