AB Bank
ঢাকা বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ট্রাম্পের পক্ষে কেন জড়ো হচ্ছেন মার্কিন ধনকুবেররা


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১১:২৮ এএম, ১৫ জুন, ২০২৪
ট্রাম্পের পক্ষে কেন জড়ো হচ্ছেন মার্কিন ধনকুবেররা

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক শ্রমমন্ত্রী রবার্ট রিচ ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের জননীতি বিষয়ের অধ্যাপক। ‘সেভিং ক্যাপিটালিজম: ফর দ্য মেনি, নট ফিউ’ গ্রন্থের লেখক রবার্ট রিচ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে কলাম লেখেন। আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে রক্ষণশীল ব্যবসায়ীরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কীভাবে নেমেছেন, তা একটি নিবন্ধে তুলে ধরেছেন তিনি।

ইলন মাস্ক এবং উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী ডেভিড স্যাক্স গত মাসে হলিউডে ধনকুবেরদের একটি গোপন সান্ধ্যভোজের আয়োজন করেন। এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল, জো বাইডেনকে পরাজিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবার হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনা।

ওই সান্ধ্যভোজে অতিথিদের তালিকায় ছিলেন পিটার থিয়েল, রুপার্ট মারডক, মাইকেল মিলকেন, ট্রাভিস কালানিক এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানচিন। ইলন মাস্ক অবশ্য এরই মধ্যে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার)  তাঁর বাইডেনবিরোধী বক্তব্যের সংখ্যা ও আওয়াজ দুই–ই বাড়িয়েছেন।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাস্ক এ বছর প্রতি মাসে গড়ে অন্তত সাতবার প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বয়স থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ও অভিবাসন নীতিসহ নানা বিষয়ে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেছেন। জো বাইডেনকে ‘অতি বাম রাজনীতি-যন্ত্রের করুন মুখ’ আখ্যায়িত করেছেন তিনি।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইলন মাস্ক একই সময়ে ট্রাম্পের পক্ষে ২০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফৌজদারি মামলা সংবাদমাধ্যম ও প্রসিকিউটরদের পক্ষপাতের ফল বলেও দাবি করেছেন তিনি। বিষয়টিকে ছোটখাটো ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করার অবকাশ নেই। কারণ, এক্সে মাস্কের ১৮ কোটি ৪০ লাখ অনুসারী রয়েছে। তা ছাড়া যেহেতু তিনি এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মালিক সে কারণে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ যাতে তাঁর পোস্ট দেখতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে অ্যালগরিদমে ওলটপালট করার ক্ষমতাও তাঁর রয়েছে।

আর কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের প্রধান ইলন মাস্কের মতো এতটা সরাসরি বিশ্বের কর্তৃত্ববাদী নেতাদের সমর্থন জানাননি। মাস্ক নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ট্রাম্প ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আর্জেন্টিনার জাভিয়ের মিলেই এবং ব্রাজিলের জইর বলসোনারোর পক্ষে কথা বলেছেন তিনি।

এই সমর্থনের পেছনে ইলন মাস্কের ব্যবসায়িক স্বার্থও রয়েছে। ভারতে তিনি তাঁর টেসলা গাড়ির জন্য কম শুল্কারোপ নিশ্চিত করতে পেরেছেন। ব্রাজিলে তিনি তাঁর স্পেসএক্স স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংকের জন্য একটি বড় বাজার খুঁজে পেয়েছেন। আর্জেন্টিনা থেকে তিনি লিথিয়াম পাওয়া নিশ্চিত করেছেন। টেসলার ব্যাটারির জন্য লিথিয়াম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

তবে শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থই নয় বরং এর গভীরে কিছু একটা চলছে। মাস্ক, থিয়েল, মারডক ও তাঁদের সঙ্গে যুক্ত ধনকুবেররা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রযুক্তি খাতের বড় বিনিয়োগকারী পিটার থিয়েল একবার লিখেছিলেন, ‘আমি আর বিশ্বাস করি না যে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে।’

 স্বাধীনতা যদি গণতন্ত্রের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হয়, তাহলে এটা কিসের সঙ্গে চলতে পারে? থিয়েল রিপাবলিকান সিনেটর জে ডি ভ্যান্সের নির্বাচনী প্রচারে দেড় কোটি ডলার অনুদান দিয়েছিলেন। এই ভ্যান্স অভিযোগ করেছিলেন যে ২০২০ সালের নির্বাচন চুরি করা হয়েছে। এ ছাড়া বাইডেনের অভিবাসন নীতি নিয়ে তাঁর ভাষ্য, এর অর্থ দেশে আরও ডেমোক্রেটিক দলের ভোটার

থিয়েল রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট বাছাইয়ের দৌড়ে থাকা অ্যারিজোনার ব্লেক মাস্টার্সের তহবিলেও অন্তত এক কোটি ডলার দিয়েছেন। ব্লেক দাবি করেছিলেন যে ট্রাম্পই ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। আধুনিক সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা কর্তৃত্ববাদী লি কুয়ান ইউয়েরও ভক্ত তিনি। মাস্ক, থিয়েলের মতো ধনকুবেরদের অর্থ এখন ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রচারণায় যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি নিয়ে কাজ করা ‘আমেরিকানস ফর ট্যাক্স ফেয়ারনেস’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির মাত্র ৫০টি পরিবার এরই মধ্যে ২০২৪ সালের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের জন্য ৬০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছে। ওই অর্থের বেশির ভাগই গেছে ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টিতে।

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের সমর্থকেরা যখন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে আক্রমণ করে তখন ব্ল্যাকস্টোন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী ধনকুবের স্টিফেন এ শোয়ার্জম্যান একে ‘বিদ্রোহ’ বলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘এটা আমাদের প্রিয় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অবমাননা।’ সেই শোয়ার্জম্যানই এখন ট্রাম্পকে সমর্থন দিচ্ছেন। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, ‘আমাদের বর্তমান অর্থনৈতিক, অভিবাসন ও পররাষ্ট্র নীতি দেশকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে।’ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারের জন্য ১০০ কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহে সম্প্রতি জ্বালানি তেল খাতের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর একদল নির্বাহীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জানা গেছে, সেখানে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে নির্বাচিত হলে বাইডেনের নেওয়া পরিবেশ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিবিষয়ক ডজনখানেক বিধান ও নীতি উল্টে দেবেন।

ট্রাম্প আরও বলেছেন, তেল কোম্পানিগুলোর নির্বাহীদের সঙ্গে একটি চুক্তি করা হবে, যাতে তাঁরা করছাড় পাবেন এবং তাঁদের শিল্পের ওপর আরোপিত বিধিবিধান এড়িয়ে যেতে পারেন। গত জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের সম্মেলনে একটি অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ও বেশি লাভজনক ব্যাংক জেপি মরগান চেজ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান জেমি ডিমন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ট্রাম্পের নেওয়া  বিভিন্ন নীতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। জেমি ডিমন বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী সিইওদের একজন। তিনি বলেছিলেন, ‘সততার সঙ্গে একটি পেছনে তাকিয়ে দেখুন। ট্রাম্প অর্থনীতিকে ভালোই বড় করছিলেন। (তাঁর) কর সংস্কার কাজে লেগেছিল।’বাস্তবে জেমি ডিমনের এই বক্তব্য কিন্তু সত্য নয়। বরং ট্রাম্পের আমলে দেশের অর্থনীতি থেকে প্রায় ২৯ লাখ চাকরি হারিয়ে যায়। এমনকি করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগেও ট্রাম্পের সময়ে কর্মসংস্থান যে হারে বেড়েছে, তা ছিল বাইডেনের আমলের চেয়ে ধীরগতির।

একুশে সংবাদ/প্র.আ/হা.কা

Link copied!