যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করলেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের গ্রিন কার্ডের প্রতিশ্রুতি দিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামি মার্কিন নির্বাচনের এই রিপাবলিকান প্রার্থী বলেছেন, ‘(নির্বাচিত হলে) যা আমি করব, তা হলো, যেহেতু আপনারা এই দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, আপনাদের এই ডিগ্রির অংশ হিসেবেই গ্রিন কার্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব আপনাদের প্রাপ্য।’
সম্প্রতি মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেছেন এমন প্রায় পাঁচ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপরই বৃহস্পতিবার ট্রাম্প অল-ইন পডকাস্টকে বলেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি বা জুনিয়র কলেজ হিসেবে পরিচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও কেউ দুই বছরের প্রোগ্রাম শেষ করতে পারলে তিনি গ্রিন কার্ড পাবেন। ডক্টরেট গ্র্যাজুয়েটধারীরাও এই কার্ড পাবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী আবাসন কার্ডই সাধারণত গ্রিন কার্ড নামে পরিচিত। এটি হলো দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়ার একটি ধাপ। পডকাস্টে শুরুতে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি ‘বিশ্বসেরা এবং উদীয়মান শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে আনতে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেবেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আরও বলেন, মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোতে করিৎকর্মা জনবল দরকার। কিন্তু তারা এখানকার কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো চুক্তিও করতে পারেন না। কারণ, তারা মনে করেন না, তারা এ দেশে থাকতে পারবেন। আর কাজটি প্রথম দিনেই (ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার প্রথম দিন) শেষ করা হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনীতির কেন্দ্রে রয়েছে মুসলিম ও কৃষ্ণাঙ্গভীতি আর অভিবাসীবিরোধী ঘৃণা বিদ্বেষের বিস্তার। ২০১৬ সালে যখন তিনি প্রথম নির্বাচনি প্রচার শুরু করেন, সে সময় তিনি অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। এমনকি অভিবাসীরা ‘যুক্তরাষ্ট্রের রক্ত দূষিত করছে’ বলেও মন্তব্যও করেছিলেন। সেই রাজনীতি যে এবারও বন্ধ হবে না, তারও ইঙ্গিত মিলেছে। গ্রিন কার্ড সংক্রান্ত ট্রাম্পের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর তার নির্বাচনি প্রচারাভিযান দফতরের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভেট এক বিবৃতিতে বলেন, যেসব স্নাতক ডিগ্রিধারী কমিউনিস্ট মতাদর্শ প্রভাবিত, কট্টর ইসলামপন্থি, হামাসের সমর্থক, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে এবং যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের ঘোষণা প্রযোজ্য হবে না।
আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রে। এএফপি বলছে, সেই নির্বাচনের ফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে অভিবাসীদের ভোট। এ কারণে বাইডেন এবং ট্রাম্প উভয়েই অভিবাসীদের আনুকূল্য অর্জনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :