রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্দেশ্যে মস্কোর দেওয়া প্রস্তাব শত্রুতা শেষ করার একটি বাস্তবসম্মত উপায়। কিন্তু পশ্চিমারা এটিকে উপেক্ষা করছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ কথা বলেছেন। রুশ গণমাধ্যম আরটি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এই মাসের শুরুর দিকে বৈদেশিক নীতিসংক্রান্ত এক বক্তৃতায় রুশ নেতা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ইউক্রেন যদি সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পদ না চাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ও রাশিয়ার দাবিকৃত সব অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে, তবে তিনি যুদ্ধবিরতির আদেশ দেবেন। তবে কিয়েভ সঙ্গে সঙ্গে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ ছাড়া এই সপ্তাহে রাশিয়া আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক ফোরামে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেছিলেন, তার প্রস্তাবটি আগ্রহী পক্ষগুলোর সাবধানে বিবেচনা করা উচিত।
পুতিনের একটি লিখিত স্বাগত বার্তা মঙ্গলবার তার পররাষ্ট্র নীতির সহযোগী ইউরি উশাকভ পাঠ করেন।
সেখানে বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমা অনেক রাজনীতিবিদ আমাদের প্রস্তাবিত উদ্যোগের মূলে যেতে চেষ্টাও করেননি। আমি আশা করি, এই ফোরামের অংশগ্রহণকারীরা এটিকে চিন্তা-ভাবনা ও যুক্তিযুক্তভাবে যাচাই করবে এবং দেখবে, এটি সংঘর্ষ থামানোর একটি বাস্তব সুযোগ ও রাজনৈতিক-কূটনৈতিক সমাধান দেয় কি না।’
উশাকভ আরো বলেন, মস্কো ‘যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের মতপার্থক্যের নিষ্পত্তি ও প্রাণহানি বন্ধের একটি সুযোগ দিচ্ছে।’ তবে পশ্চিমারা রাশিয়ার সঙ্গে ‘শেষ ইউক্রেনীয় বেঁচে থাকা পর্যন্ত’ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়।
এ ছাড়াও তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আপাতত পশ্চিম উদ্দীপিত সামরিক উন্মাদনা’ কমছে না। এ সময় তিনি গত রবিবার ইউক্রেনের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার উদ্ধৃতি দেন। ওই হামলায় দেড় শতাধিক বেসামরিক লোক আহত হয়েছে এবং ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপলের সমুদ্র সৈকতে কমপক্ষে চারজন প্রাণ হারিয়েছে।
মস্কো দাবি করেছে, এই হামলার দায় ওয়াশিংটনেরও রয়েছে। কারণ ইউক্রেন মার্কিন সরবরাহকৃত এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রগুলো গুচ্ছ বোমার সঙ্গে এ হামলায় ব্যবহার করেছে।
পাশাপাশি কিছু রুশ কর্মকর্তা যুক্তি দিয়েছেন, মার্কিন সামরিক বিশেষজ্ঞরা অবশ্যই অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। অন্যদিকে ইউক্রেনের নেতা ভোলোদিমির জেলেনস্কির একজন সহযোগী মিখাইল পোডোলিয়াক দাবি করেছেন, সমুদ্র সৈকতে গমনকারীরা ছিল ‘বেসামরিক দখলদার’।
এ ছাড়াও উশাকভ জানান, রাশিয়ার সার্বিক লক্ষ্য একটি অবিভাজ্য প্যান-ইউরেশীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা, যা বিলুপ্তির পথে থাকা ইউরোআটলান্টিক ও ইউরোকেন্দ্রিক মডেলগুলোকে প্রতিস্থাপন করবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :