এবার জার্মানিতে শক্ত সামরিক অবস্থান নিশ্চিত করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ২০২৬ সাল থেকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন শুরু করবে ওয়াশিংটন। ভবিষ্যতে জার্মানিতে মোতায়েন করতে যাওয়া মার্কিন এসব দূরপাল্লার স্ট্রাইক সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে এসএম-৬, টমাহক ও ভয়ংকর সব হাইপারসনিক অস্ত্র। খবর আনাদোলু এজেন্সি ও রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির বুধবারের (১০ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, ২০২৬ সালে জার্মানিতে মাল্টি-ডোমেন টাস্ক ফোর্সের দূরপাল্লার অস্ত্র মোতায়েন শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র। ভবিষ্যতে স্থায়ীভাবে এসব রেখে দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ কর্মযজ্ঞ শুরু হতে যাচ্ছে। এসব অস্ত্র ইউরোপের অন্যান্য দেশে মোতায়েন মার্কিন অস্ত্রের চেয়ে বেশি দূরপাল্লার এবং বিধ্বংসী। ভূমি থেকে তা যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে মুহূর্তে আঘাত হানার জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হবে, যা হবে শত্রুর জন্য রীতিমতো ভয়ের।
বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যাটোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি এবং ইউরোপীয় সমন্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অবদান রাখতে ওয়াশিংটন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জার্মানি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আধুনিক যুগের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র সেখানে পাঠানো হবে।
এর আগে ২০২১ সালে ইউএস সেনাবাহিনী জার্মানির উইসবাডেনে দ্বিতীয় মাল্টি-ডোমেন টাস্ক ফোর্স চালু করে। যা প্রথাগত স্থল যুদ্ধ কৌশলের বাইরে শক্তিশালী মার্কিন কমান্ড নিশ্চিত করে চলেছে। এবারের অস্ত্র এবং লজিস্টিক সাপোর্ট হবে আরও উন্নত ও কার্যকর।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের মিখাইল গর্বাচেভ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রিগ্যান স্বাক্ষরিত মধ্যবর্তী-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) চুক্তির অধীনে ৫০০ কিলোমিটার অতিক্রমকারী স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ২০১৯ সাল পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দুই পরাশক্তি তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার কমাতে সম্মত হয়েছিল এবং এ ধরনের অস্ত্রের একটি সম্পূর্ণ মজুত ধ্বংস করে।
স্বাক্ষরকারীদের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জার্মানি, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্র ১৯৯০ এর দশকে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে। পরে স্লোভাকিয়া ও বুলগেরিয়াও তা অনুসরণ করে।
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে আইএনএফ চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। ওই সময় দেশটির অভিযোগ ছিল, মস্কো চুক্তি লঙ্ঘন করে ৯এম৭২৯ স্থলচালিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন ও উন্নতি করছে। এ ক্ষেপণাস্ত্রটিই ন্যাটোতে এসএসসি-৮ নামে পরিচিত।
তখন রাশিয়া অভিযোগ অস্বীকার করলেও চলতি বছরের জুন মাসে মধ্য ও স্বল্পমাত্রার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন পুনরায় শুরু করার ঘোষণা দেয়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোর কাছে এ ধরনের অস্ত্র বিক্রি করছে, যা খুবই বিপজ্জনক। এ অবস্থায় রাশিয়া বসে থাকতে পারে না।
তিনি আরও বলেছিলেন, রাশিয়া এই জাতীয় ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের উৎপাদন আবার শুরু করেছে। অনুশীলনের জন্য তা ডেনমার্কে নিয়ে এসেছে এবং ফিলিপাইনেও নিয়ে গেছে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :