গাজা শহরের কয়েকটি এলাকায় অভিযানের নামে তাণ্ডব চালানোর পর সরে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী। শহরটির তাল আল-হাওয়া এবং এর আশপাশের এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি উদ্ধারকর্মীদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
খবরে বলা হয়, তাল আল-হাওয়া এলাকা থেকে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানে বেঁচে যাওয়া লোকদের উদ্ধার করতে গাজার জরুরি পরিষেবার কর্মীরা এগিয়ে আসেন। সিভিল ডিফেন্সের দলগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু লোকের মরদেহ খুঁজে পায়, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
শুক্রবার (১২ জুলাই) গাজার সিভেল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, কিছু মরদেহ কুকুর খেয়ে ফেলেছে। অন্তত ৬০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকটি মরদেহ ওই এলাকায় কবর দেওয়া হয় এবং বাকিগুলো নিকটবর্তী হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
মাহমুদ বাসাল আরও বলেন, অনেক মরদেহ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা কাছাকাছি অবস্থান করায় উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
গত সোমবার (৮ জুলাই) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর তাল আল-হাওয়া এলাকায় অভিযান চালায় তারা।
গাজা শহরের শুজাইয়া এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সরে যাওয়ার পর সেখানেও বেশ কয়েকজনের মরদেহের সন্ধান মিলে। গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) মাহমুদ বাসাল বলেছিলেন, সিভিলি ডিফেন্সের দলগুলো ধ্বংসস্তূপ থেকে বেশ কয়েকজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। শুজাইয়া এলাকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি সেনারা ফিরে যাওয়ার সময়ও আশপাশের বাসিন্দাদের ওপর গুলি চালিয়েছে।
যুদ্ধের আগে গাজার এক চতুর্থাংশেরও বেশি বাসিন্দার আবাসস্থল ছিল গাজা শহর। ২০২৩ সালের শেষের দিক থেকে ক্রমাগত হামলায় শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে ইসরায়েল নতুন করে গাজা শহর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার আগেও কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপের মাঝেই নিজেদের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন।
গাজার স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক পরিসরে তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে। হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েল গাজা শহরে বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় গাজা শহরের তাল আল-হাওয়া থেকে সন্ত্রাসী দখলদার বাহিনীকে প্রত্যাহারের পর তাদের কয়েক দিনের আক্রমণ ও তীব্র বোমা হামলার নৃশংসতা প্রকাশ পেয়েছে, গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূলের মতো যুদ্ধাপরাধ। হামাস জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল জাতিগত নিধনে যে যুদ্ধ চালাচ্ছে, তার অবসান ঘটাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানায়। চলমান এ সংঘাতে ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮৮ হাজারের বেশি লোক আহত হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এ.টি/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :