রাজনৈতিক অস্থিরতায় নতুন জোট সরকার হতে যাচ্ছে নেপালে। নতুন এই সরকারের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল আস্থা ভোটে হেরে যান। এরপরই নতুন সরকার গঠনের পথ খুলে যায়।
এর মধ্য দিয়ে নেপালে ২০ মাস ধরে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ২০০৮ সালে নেপালে ২৩৯ বছরের পুরোনো রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে। এরপর থেকে গণতান্ত্রিক নেপালে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা। কে পি শর্মা অলি নতুন সরকার গঠন করলে সেটা হবে ২০০৮ সালের পর দেশটিতে গঠন করা ১৪তম গণতান্ত্রিক সরকার।
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহলের সরকারের ওপর থেকে গত সপ্তাহে সমর্থন তুলে নেয় অন্যতম বৃহত্তম জোটসঙ্গী লিবারেল কমিউনিস্ট ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট (ইউএমএল) পার্টি। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন কে পি শর্মা অলি। এরপর পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে ৬৯ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহলের সামনে দুটি বিকল্প খোলা ছিল— হয় তাকে সরকারপ্রধানের পদ ছাড়তে হবে, নতুবা পার্লামেন্টে নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। পুষ্পকমল দহল দ্বিতীয় বিকল্প বেছে নেন।
কে পি শর্মা অলি এর আগে দুবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গত জুনের শেষের দিকে তিনি মধ্যপন্থী দল নেপালি কংগ্রেসের (এনসি) সঙ্গে একটি চুক্তি করেন। এর ফলে পার্লামেন্টে এই জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পথ সুগম হয়। তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, কে পি শর্মা অলি নতুন সরকার গড়বেন। তবে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে পুষ্পকমল দহল হেরে যাওয়ার পর কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বে নতুন জোট সরকার কবে নাগাদ দায়িত্ব নেবে, সে সম্পর্কে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।
ভোটাভুটিতে উতরে যেতে সাবেক মাওবাদী নেতা পুষ্পকমল দহলের ২৭৫ আসনের পার্লামেন্টে ন্যূনতম ১৩৮টি ভোট দরকার ছিল। পার্লামেন্টে হাজির ছিলেন ২৫৮ সদস্য। তাদের মধ্যে পুষ্পকমল দহলের পক্ষে ভোট দেন মাত্র ৬৩ জন। আর বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৯৪টি। বাকি একজন ভোটদানে বিরত ছিলেন। স্পিকার দেব রাজ ঘিমিরি ভোট গণনা শেষে বলেন, আস্থা ভোটে পার্লামেন্ট সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে সরকার গঠন করেছিলেন পুষ্পকমল দহল। তখন তৃতীয়বারের মতো নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। এরপর সরকার টেকাতে তাকে তিনবার জোটসঙ্গী বদলাতে হয়। আর পাঁচবার পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হয়। শুক্রবার পঞ্চমবারের অনাস্থা ভোটে হেরে যান তিনি। সূত্র: রয়টার্স
একুশে সংবাদ/বা.প্র/হা.কা
আপনার মতামত লিখুন :