নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা এখন গোটা বিশ্বের নজরে। আর এরপরই আলোচনায় সিক্রেট সার্ভিস। গোয়েন্দা সংস্থাটির তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে। গুলিতে ট্রাম্প প্রাণে বেঁচে গেলেও তার ডান কানের ওপরের অংশ ফুটো হয়ে গেছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ও সমাবেশে উপস্থিত একজন ট্রাম্প সমর্থক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
সিক্রেট সার্ভিস কী? এর সদস্যরা আর কাদের নিরাপত্তা দেন? তারা কীভাবে কাজ করে থাকেন? হলিউডের বদৌলতে সিক্রেট সার্ভিস নিয়ে প্রচলিত নানা মিথ। কমতি নেই কৌতূহল আর ধোঁয়াশারও।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ, ভাইস প্রসিডেন্ট, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রার্থীদের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে রাখাই মূল কাজ সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যদের। এতে নেতাদের জন্য বিভিন্ন কোড নেম ব্যবহার করে থাকে এজেন্টরাও। শুধু তাই নয়, গোপনীয়তা রক্ষার্থে জনসাধারণের দৃষ্টি এড়িয়ে নজরদারির সক্ষমতা রাখে।
ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যদের তৎপরতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প। এ ছাড়া হামলার পর দেয়া প্রথম প্রতিক্রিয়ায় সিক্রেট সার্ভিস ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প নিজেও।
একদিকে ঘটনার পরের তৎপরতার জন্য প্রশংসা পেলেও অন্যদিকে প্রশ্ন উঠছে, এতো আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার মধ্যেও কীভাবে হামলার ঘটনা ঘটলো? কীভাবে এতো বড় তথ্য ঘূর্ণাক্ষরেও টের পেলেন না সিক্রেট সার্ভিসের কর্মকর্তারা? এই বিশেষ এজেন্টদের কাজই বা কী?
হলিউডের বদৌলতে সিক্রেট সার্ভিস নিয়ে প্রচলিত হাজারো রকম মিথ। হলিউডি জাঁকজমকের ভিড়ে সাধারণদের মধ্যে সিক্রেট সার্ভিস নিয়ে একাধারে কৌতূহল ও আগ্রহের শেষ নেই। ইউনাইটেড স্টেটস সিক্রেট সার্ভিস হলো একটি ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের অধীনে রয়েছে।
দামি স্যুট, চকচকে বুট, চোখে গাঢ় কালো সানগ্লাস, কানে ব্লুটুথ ইয়ারফোন, এভাবেই অনেকে সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যদের চিনে থাকলেও বাঁধাধরা নিয়মের বাইরেও তারা থাকেন ভিন্ন পোশাকে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনোকিছুই তোয়াক্কা করেন না তারা। অভিজাত সদস্যদের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। প্রায় সাড়ে ছ’হাজার দক্ষ সদস্য রয়েছে সিক্রেট সার্ভিসে।
দেশটিতে প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাদের প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, ভাইস প্রসিডেন্ট, গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সেবা-নিরাপত্তা প্রদান সিক্রেট সার্ভিসের মূল কাজের পরিধির অন্তর্ভুক্ত। তাদের প্রস্তুত থাকতে হয় হত্যাচেষ্টা, অপহরণ, সম্মুখযুদ্ধে গোলাগুলির মতো যে কোনো ঘটনার জন্য।
যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনের আগে সব দুর্ঘটনা ও আক্রমণ প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক সঙ্গ দেয়া এই সদস্যদের দেয়া হয় অভিনব ট্রেনিং সেশন। প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত কি করতে হবে তাও। কাজের গোপনীয়তা নেতাদের জন্য বিভিন্ন কোড নেম ব্যবহার করে থাকেন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরাও।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :