কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন-বিক্ষোভ চলছে বাংলাদেশে। এ বিক্ষোভে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যেই কোটা ইস্যুতে চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারতেও। কারণ, দেশটির কর্ণাটক সরকার কোটা নিয়ে এবার আঞ্চলিক ভাষার রাজনীতিকেই দিয়েছে গুরুত্ব।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভারতের দক্ষিণের রাজ্যটিতে বেসরকারি চাকরিতে বিশেষ পদে কন্নড়ভাষীদের জন্য ‘১০০ শতাংশ কোটা’ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিদ্দারামাইয়া সরকার। ইতোমধ্যে নতুন বিলে ছাড়পত্র দিয়েছে কর্ণাটকের মন্ত্রিসভা।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিধানসভায় পেশ করা হতে পারে এ সংক্রান্ত বিল। বুধবার (১৭ জুলাই) এক্স হ্যান্ডেলে এ নিয়ে পোস্টও দেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। যদিও পরে পোস্টটি ডিলিট করা হয়। জানা গেছে, কর্ণাটকের নতুন কোটা নীতিতে বেসরকারি সংস্থার গ্রুপ ‘সি’ এবং গ্রুপ ‘ডি’ পদে কন্নড়ভাষীদের নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। অর্থাৎ স্থানীয়দের জন্য ১০০ শতাংশ কোটা।
গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নতুন বিলে বলা হয়েছে, যেকোনো সংস্থাকে ‘ম্যানেজমেন্ট’ ক্যাটাগরিতে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ‘স্থানীয় প্রার্থী’ নিয়োগ করতে হবে। আর ‘নন-ম্যানেজমেন্ট’ ক্যাটাগরিতে ‘স্থানীয় প্রার্থীদের’ জন্য কমপক্ষে ৭০ শতাংশ কোটা থাকবে। ‘কর্ণাটক স্টেট এমপ্লয়মেন্ট অব লোকাল ক্যান্ডিডেটস ইন দ্য ইন্ডাস্ট্রি, ফ্যাক্টরি অর আদার এসটাবলিশমেন্টস বিল’-এ আরও বলা হয়, বেসরকারি সংস্থায় চাকরি-প্রার্থীকে কমপক্ষে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কন্নড় ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। অন্যথায় তাকে ভাষার পরীক্ষা দিতে হবে।
ভারতের দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে ভাষার রাজনীতি নতুন বিষয় নয়। তবে বেসরকারি চাকরিতে স্থানীয়দের জন্য ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ কোটা রাখার বিষয়টিকে নজিরবিহীন ঘটনা বলছেন অনেকেই। এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া অবশ্য দাবি করেছিলেন, তার সরকার কন্নড়ভাষীদেরই সরকার। তাদের ভালোমন্দ দেখারও দায়িত্ব রয়েছে।
তবে বিলের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত সংখ্যক যোগ্য স্থানীয় প্রার্থী না পাওয়া গেলে সংস্থাগুলো কোটা শিথিলের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে পারে। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে কর্ণাটক সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ এস লাড়। তিনি বলেন, ‘ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ে ৫০ শতাংশ কোটার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, অন্যান্য পদে ৭০ শতাংশ। যদি স্থানীয় কর্মী না পাওয়া যায়, তবেই অন্য রাজ্যের কর্মী নিয়োগ করা যাবে। রাজ্য সরকারের প্রধান লক্ষ্যই হলো যত বেশি সম্ভব স্থানীয়দের চাকরির ব্যবস্থা করা।’
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :