সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা দমনের নামে দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে মানুষ। সম্প্রতি প্রদেশটিতে লাখ লাখ মানুষের বিশাল বিক্ষোভ হয়েছে। কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ জোরালো হচ্ছে। এর মধ্যে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানবাধিকারকর্মী এবং ব্যবসায়ী নেতারা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। এতে ভঙ্গুর অর্থনীতি আরো সংকটের দিকে যাবে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। বিষয়টি এরই মধ্যে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
রোববার এ বিষয়ে নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন পাকিস্তানের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) প্রতিমন্ত্রী শাজা ফাতিমা খাজা। তিনি দাবি করেন, ইন্টারনেটের ধীর গতির কারণ হলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)–এর অত্যধিক ব্যবহার।
রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী ফাতিমা খাজা বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি যে পাকিস্তান সরকার ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেয়নি। সরকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা বের করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, কিছু অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড হচ্ছিল না। তাই লোকেরা ভিপিএন ব্যবহার করেছিল। ভিপিএন অন করলে ফোনের গতি কমে যায়। সীমিত সংযোগের কারণে, বিশেষ করে কিছু অঞ্চলে মোবাইল ডেটা ব্যবহারের সময় দেশজুড়ে লাখ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পর মন্ত্রী এ দাবি করেন।
কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ও ওয়্যারলেস অ্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তান (ডব্লিউআইএসপিএপি) এই সমস্যার জন্য ইন্টারনেটে বিভিন্ন কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ নিতে বাড়তি নিরাপত্তা ও নজরদারির জন্য ফায়ারওয়াল স্থাপনকে দায়ী করেছেন।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে, খাজা একটি ইন্টারনেট ফায়ারওয়াল প্রয়োগের সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন এবং এটিকে সাইবার সুরক্ষার জন্য ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশ করে’ বলে জানান। তিনি বলেন, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাইবার নিরাপত্তা হামলা চালানো হচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা হুমকি থেকে রক্ষার জন্য আরও সক্ষমতা থাকা দরকার।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, ইন্টারনেটের বিষয়ে তিনি তথ্যপ্রযুক্তি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আগামী সপ্তাহেও ইন্টারনেট নিয়ে বৈঠক হবে। বিষয়টি মোকাবেলায় সরকারের প্রচেষ্টার কথা প্রকাশ করে খাজা বলেন, ইন্টারনেট সংযোগ বাড়াতে পাকিস্তানে আরও চারটি ইন্টারনেট কেবল স্থাপন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ইন্টারনেটের গতি ব্যাপকভাবে কমে গেছে, এমনকি কোনো কোনো অঞ্চল ইন্টারনেট থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেও জানা গেছে। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত বুধবার থেকে চলছে এই অবস্থা।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :