পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে পুলিশ স্টেশন, রেললাইন ও মহাসড়কে যানবাহনে একযোগে হামলা চালিয়েছে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা। এই হামলায় অঞ্চলটিতে ৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে।সোমবার (২৬ আগস্ট) দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বহু বছর ধরে পাকিস্তানের খনিজসমৃদ্ধ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। স্বাধীন বেলুচিস্তানের দাবিতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে লড়াই করছে তারা। এই প্রদেশে সোনা ও তামার খনি ছাড়াও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ গোয়াদর বন্দর রয়েছে। দেশটির এই বন্দরে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ রয়েছে।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি বলেছেন, এসব হামলা পাকিস্তানে নৈরাজ্য সৃষ্টির সুপরিকল্পিত নীলনকশা। রোববার ও সোমবারের হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে অন্তত ১২ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন।
দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, সন্ত্রাসীদের বৃহৎ হামলার পর সংঘর্ষে ১৪ সেনা ও পুলিশ এবং ২১ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। হামলার সময় বেলুচিস্তানের প্রধান মহাসড়কে বাস থেকে পণ্যবাহী যানবাহনকেও লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে ১২ সন্ত্রাসীর নিহতের তথ্য জানানো হয়েছে; তা সামরিক বাহিনীর প্রকাশিত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কি না তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় কমপক্ষে ২৩ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এছাড়া ৩৫টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে।
দেশটির রেলওয়ে বিভাগের কর্মকর্তা মুহাম্মদ কাশিফ বলেন, বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানীর সাথে পাকিস্তানের বাকি অংশকে সংযোগকারী একটি রেল সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া প্রতিবেশি ইরানের সাথে সংযোগকারী রেললাইনে বিস্ফোরণের পর কোয়েটার সাথে রেল চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।
দেশটির পুলিশ বলেছে, রেলওয়ে সেতুর যে স্থানে হামলা হয়েছে, সেখানে এখনও অন্তত ছয়জনের মরদেহ পড়ে আছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, বেলুচিস্তানে পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যালয় লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী কয়েকটি গোষ্ঠীর মধ্যে সবেচেয়ে আলোচিত দ্য বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে আন্দোলন করে আসা সশস্ত্র এই গোষ্ঠী এক বিবৃতিতে আধা-সামরিক বাহিনীর একটি ঘাঁটিসহ অন্যান্য স্থাপনায় হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত বিএলএর হামলা চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :