যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার অরলিংটনের জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে গিয়ে ‘নির্বাচনী প্রচারণা’ চালিয়ে ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনা করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্যানুযায়ী, ট্রাম্পের প্রচারাভিযান নিয়ে শনিবার (৩১ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন কমলা হ্যারিস। সেখানে তিনি লিখেছেন, সামরিক সমাধিস্থল রাজনীতি করার জায়গা না। ট্রাম্প রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করে পবিত্র ভূমিকে অসম্মান করেছেন।
মার্কিন ফেডারেল আইন ও পেন্টাগনের নীতি অনুযায়ী, সমাধিক্ষেত্রের ভেতরে ছবি তোলা বা ভিডিও করার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, প্রচারাভিযানের সময় এ বিষয়েই ট্রাম্প শিবিরকে সতর্ক করতে গিয়েছিলেন সেখানকার এক কর্মী। এ সময় ট্রাম্পের দলের দুই কর্মী ওই কর্মচারীকে গালিগালাজ করে এবং ধাক্কা দিয়ে একপাশে ঠেলে সরিয়ে দেয়।
গত বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এটি দুর্ভাগ্যজনক যে, এএনসি কর্মচারী এবং তার পেশাদারিত্বের উপর অন্যায়ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। তবে ট্রাম্পের শিবির এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলেছে, যদি এই ধরনের মানহানিকর দাবি করা হয় আমরা ফুটেজ প্রকাশ করতে প্রস্তুত।
ট্রাম্পের শিবির দাবি করেছে, তারা নিহত সেনাদের পরিবারের কাছ থেকে ভিডিও করার অনুমতি পেয়েছিলেন।
গত সোমবার, অরলিংটনের জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে ট্রাম্পের উপস্থিতির পর বিতর্ক তৈরি হয়। ওইদিন ট্রাম্প নিহত ১৩ সেনাসদস্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে গিয়েছিলেন। তিন বছর আগে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহারের সময় এই সৈন্যরা নিহত হন।
এ ঘটনায় গতকাল শনিবার ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তিনি এক্স পোস্টে লেখেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আমি কয়েকবার অরলিংটন সমাধিক্ষেত্রে গিয়েছি। কিন্তু কখনোই আমি এটিকে রাজনৈতিক সাফল্যের জন্য ব্যবহার করব না।
হ্যারিস বলেন, আমেরিকান হিসাবে যদি আমরা সবাই একমত হতে পারি, তাহলো তা হলো- অবসরে যাওয়া সেনাসদস্য, তাদের পরিবার এবং সেনাবাহিনীকে সম্মান করা উচিত। তাদের সঙ্গে আচরণে সর্বোচ্চ সম্মান ও কৃতজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি, যে ব্যক্তি এই সাধারণ ও পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে পারেন না, তার কখনোই মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে দাঁড়ানো উচিত নয়।
বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্প তার জবাবও দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার মিশিগানে একটি জনসভায় ট্রাম্প বলেন, নিহত সেনাদের পরিবার তাকে আর্লিংটন সমাধিক্ষেত্রে যেতে বলেছেন। এমনকি তারা ট্রাম্পের সঙ্গে ছবি তোলার ইচ্ছেও পোষণ করেছিলেন বলে জানান তিনি।
ট্রাম্প বলেন, আমি সেখানে গেলাম। তারা আমাকে ছবি তোলার অনুরোধ করলেন। অথচ একদল সমালোচক বলতে শুরু করল, আমি নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :