বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মিশরের রাজধানী কায়রো। দীর্ঘ এক হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে শহরটি মিশরের রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে এবার কায়রোর ওপর চাপ কমাতে রাজধানী স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটির সরকার। নতুন এই রাজধানীর নাম রাখা হয়েছে নিউ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যাপিটাল (ন্যাক)।জানা গেছে, কায়রো থেকে ৪৫ কিলোমিটার পূর্বে মরুভূমির মধ্যে অবস্থিত ন্যাকের আয়তন ৭৩৫ বর্গকিলোমিটার; অর্থাৎ আয়তনের দিক থেকে নতুন এই রাজধানী শহর সিঙ্গাপুর রাষ্ট্রের সমান।
উত্তর আফ্রিকার দেশ মিশরের আয়তন ১০ লাখ ১০ হাজার ৪৮ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১০ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার। দেশটির মোট জনসংখ্যার বড় অংশই বসবাস করেন কায়রোতে। এছাড়া মিশরের সরকারি-বেসরকারি যাবতীয় দপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের অবস্থানও কায়রোতে। ফলে বছরের পর বছর ধরে জনসমষ্টির ভারে প্রায় ভেঙে পড়ার পর্যায়ে পৌঁছেছিল ২ হাজার ৭৩৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কায়রো।
এই পরিস্থিতিতে ২০১৫ সালে কায়রো থেকে রাজধানী সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মিশরের সরকার। ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ। তবে করোনা মহামারির কারণে সেই কাজে ছেদ পড়েছিল।মহামারির ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর প্রকল্পের কাজ ফের শুরু হয় এবং বর্তমানে তা শেষের পথে। মিশরের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি ২০২৪ সাল বিদায় নেওয়ার আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এরইমধ্যে ১ হাজার পাঁচশরও বেশি পরিবার কায়রো থেকে ন্যাকে গিয়ে বসবাস করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সম্প্রতি মিশরের নতুন রাজধানীর দু’টি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে। একটি ২০১৭ সালের—যখন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল অপরটি ২০২৪ সালের আগস্টের।মিশরের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, নতুন এই রাজধানী শহরে পর্যাপ্তসংখ্যক বহুতল ভবনের পাশাপাশি বিভিন্ন পার্ক এবং কৃত্রিম হ্রদ থাকবে। সবচেয়ে বড় পার্ক গ্রিন রিভারের আয়তন হবে ১০ কিলোমিটার।
নাসার স্যাটেলাইট ছবিতে সেটির চিহ্ন দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী নিউজ উইককে মিশরের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইতোমধ্যে অনেক মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের প্রধান কার্যালয় ন্যাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সূত্র: নিউজ উইক
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :