ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার বলেছেন, ইরান-সমর্থিত আঞ্চলিক মিত্রদের সহায়তায় আরও প্রায় এক বছর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার উপকরণ হামাসের কাছে আছে। তিনি বলেন ‘সর্বশক্তি নিয়োগ করে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি।’
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ প্রায় এক বছর হতে চলেছে। সেখানকার চিকিৎসক ও উদ্ধারকারীরা গত সোমবার বলেছেন, ওই দিনও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের এক সতর্কবার্তার পর ওই হামলার ঘটনা ঘটে। সতর্কবার্তায় তিনি বলেছিলেন, লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা ম্লান হয়ে আসছে। তবে বড় পরিসরে আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা আবারও বাড়তে শুরু করেছে। গাজায় সামরিক কাঠামোয় এটির আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে হামাসপ্রধান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গাজার ভেতর এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো ১১ মাসের বেশি চলা যুদ্ধ শেষে শত্রুপক্ষের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ভেঙে দেবে।
সিনওয়ার বলেন, ‘আপনাদের (হুতি) এবং লেবানন ও ইরাকের গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই শত্রুকে বিনাশ করবে এবং তাদের পরাজয় নিশ্চিত করবে।’
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি সইয়ের লক্ষ্যে কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। এ চুক্তির উদ্দেশ্য, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করা।
কয়েক দশকের পুরোনো ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে নতুন করে রক্তপাতের সূত্রপাত হয় গত ৭ অক্টোবর। সেদিন ইসরায়েলের ভেতরে নজিরবিহীন হামলা চালান হামাসের যোদ্ধারা। ইসরায়েলের দাবি, হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজা উপত্যকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েল। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১ লাখ মানুষ। অন্যদিকে উপত্যকাটির ২৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় সবাই এক বা একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সেখানে খাদ্যসংকটও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
একুশে সংবাদ/প.আ./সাএ
আপনার মতামত লিখুন :