যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী খালিস্তানপন্থী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুন হত্যার ষড়যন্ত্র মামলায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে তলব করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। সেই সঙ্গে তলব করা হয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইংয়ের (র) সাবেক প্রধান সামন্ত গোয়েল, ওই সংস্থার এজেন্ট বিক্রম যাদব ও ভারতীয় ব্যবসায়ী নিখিল গুপ্তকে। ২১ দিনের মধ্যে তাদের এই সমনের জবাব পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ নিউইয়র্ক জেলা আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে এই মামলা ও অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, যার অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলা, তার কাজকর্ম ও অতীতের ওপর বরং সবার নজর দেওয়া উচিত।
এদিকে এই সমন জারি হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের ঠিক আগে। এই সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মোদির গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। খালিস্তানপন্থীদের কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা হবে কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা না হলেও, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে রয়েছে যে, খালিস্তান ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর অবস্থান নেবে। বিশেষ করে মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে তারা অনেকটাই স্পর্শকাতর। তাই মোদির সফরের ঠিক আগে সমন জারি হওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে সমন জারির এই বিষয়ে ভারতের পদক্ষেপ কী হবে, সে সম্পর্কে পররাষ্ট্রসচিব স্পষ্ট কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে খালিস্তানপন্থী আন্দোলন ও পান্নুনের সংগঠনকে ‘দেশবিরোধী’ এবং ‘নাশকতামূলক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। মিশ্রির মতে, ‘শিখস ফর জাস্টিস’ দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের সার্বভৌমত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ফলে এই ধরনের অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা জরুরি।
প্রসঙ্গত, খালিস্তান নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুন হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ভারতীয় ব্যবসায়ী নিখিল গুপ্ত জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়। গত বছরের জুন মাসে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে তাকে সে দেশে হস্তান্তর করা হয়। গুপ্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পান্নুনকে হত্যার জন্য একজন ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেছিলেন এবং তাকে ১৫ হাজার ডলার অগ্রিম প্রদান করেছিলেন। তবে সেই ভাড়াটে খুনি আসলে যুক্তরাষ্ট্রের এক ছদ্মবেশী এজেন্ট ছিলেন।
কেবল যুক্তরাষ্ট্রই নয়, কানাডাও ভারতের বিরুদ্ধে খালিস্তানি নেতাদের হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে। কানাডায় হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার পর ভারত সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং তদন্তে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :