শ্রীলংকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনও প্রার্থীই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। এতে করে দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফায় গড়িয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় নির্বাচন।রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোট গণনায় দেখা যায়, নতুন চমক বামপন্থী অনুরা কুমারা দিসানায়েকে এগিয়ে থাকলেও নির্বাচিত হতে হলে যে মাইলফলক স্পর্শ করতে হয় তা থেকে অনেকটা দূরে রয়েছেন তিনি।
দেশটির নির্বাচনি নীতিমালা অনুযায়ী, বিজয়ী হতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে। এবারের নির্বাচনে দেশটিতে ভোট দিয়েছেন এক কোটি ৭০ লাখের বেশি ভোটার।
লংকান নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, শনিবারের নির্বাচনে বামপন্থী রাজনীতিবিদ দিসানায়েকে ৩৯ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছেন। বিরোধী নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা ৩৪ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। এই দুই প্রার্থীর মধ্যেই দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকা বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে নির্বাচনি লড়াই থেকে ছিটকে পড়েছেন।
এর আগে প্রাথমিক ফলাফলে দিসানায়েকেকে এগিয়ে থাকতে গেছে। তখন তিনিই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ধরে নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিরোধী দলের সমর্থকরা তাকে অভিনন্দন জানান।
কিন্তু সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, প্রেমাদাসা ধীরে ধীরে তার সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে আনছেন। তবে নির্বাচনের পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে আর ক্ষমতায় থাকছেন না, তা এখন নিশ্চিত হয়ে গেছে।
১৯৮২ সালের পর শ্রীলংকায় আটটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রত্যেকটিতেই প্রথম দফাতেই বিজয়ী নির্ধারিত হয়েছে। এবারই প্রথম দ্বিতীয় দফায় গড়ালো নির্বাচন।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণার পর একজন প্রার্থী মারা যান।
এর আগে ২০২২ সালে অর্থনৈতিক মন্দার জেরে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে একই বছরের মে মাসে হাজার হাজার মানুষ সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসের বাসভবনে ঢুকে পড়ে। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন গোতাবায়া।
পরে ক্ষমতায় বসেন রনিল বিক্রমাসিংহে। পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। গেলো দুই বছরে বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে শ্রীলংকা অর্থনৈতিক মন্দা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে।
২০২২ সালে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার পর অর্থাৎ দেউলিয়া হওয়ার পর এখনও শ্রীলংকা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ শুরু করেনি। দেশটির ওপর এখনও চার হাজার ৬০০ কোটি ডলার বা ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ রয়েছে।
অর্থনৈতিক মন্দা অনেকটা কেটে গেলেও শ্রীলংকায় বেঁচে থাকতে এখনও লাখ লাখ মানুষ রীতিমতো সংগ্রাম করছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :