শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল গড়াল দ্বিতীয় দফার ভোট গণনায়। গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম নির্বাচনে বামপন্থি প্রেসিডেন্ট পেল শ্রীলঙ্কা। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনায় চূড়ান্ত ফলে জয়ে পেয়েছেন অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে। এতে চূড়ান্ত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে। সোমবার প্রথম কোনো বামপন্থি নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেয়ার কথা তার। তবে সবকিছু ছাপিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট অনুড়া কি চীনপন্থি নাকি ভারতপন্থি?
গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো গত শনিবার দ্বীপ দেশটিতে অনুষ্ঠিত হয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেসহ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন ৩৯ জন প্রার্থী। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি কেউই।
রোববার প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকলেও দিশানায়েকের পাল্লায় ভোট পড়ে ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এসজেবির নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা পান ৩২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে কোনো প্রার্থীকে পেতে হবে মোট ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি। ফলে ভোট গণনা গড়ায় দ্বিতীয় দফায়।
শ্রীলঙ্কার নির্বাচন ব্যবস্থায় একটি ব্যালট পেপারে ভোটাররা পছন্দ অনুসারে পর্যায়ক্রমে তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেয়ার সুযোগ পান। সেই নিয়ম মেনে এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থীকে `দ্বিতীয় পছন্দের` প্রার্থী হিসেবে যারা ভোট দিয়েছিলেন সেগুলো আবার গণনা করা হয়। এতেও বাজিমাত দিশানায়েকের।
২০২২ সালে গণবিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। এরপর সংসদের সিদ্ধান্তে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাছাই করা হয় রনিল বিক্রমাসিংহেকে। কিন্তু কয়েক মাসের মাথায় অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ ওঠে রনিলের বিরুদ্ধে। বিপরীতে দুর্নীতিবিরোধী ও গরিবমুখী নীতির প্রচারণা চালিয়ে জনপ্রিয়তা পান ৫৫ বছর বয়সি দিশানায়েকে।
ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম বলছে, অনুড়া কুমার দিসানায়েকে চীনপন্থি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর অন্যতম কারণ তার রাজনৈতিক মতাদর্শ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বলছে, মার্ক্সিস্ট পার্টি জানাথা ভিমুক্তি পেরামুনার (জেভিপি) নেতা এই অনুড়া।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ২০২২ সালে অর্থনীতি ভেঙে পড়ার পর নিত্যপণ্যের ব্যাপক ঘাটতি এবং আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় শ্রীলঙ্কাতে। মূলত সে সময়ই অনুড়ার জোট এনপিপির জন্য টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব উপস্থিতি দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।
একুশে সংবাদ/স.ট./সাএ
আপনার মতামত লিখুন :