ফ্রান্সের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পরিষদের ওই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন নোয়েল ব্যারোট ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেন। ফ্রান্সের এ প্রচেষ্টায় শরিক হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রও। লেবাননের নিরপরাধ জনগণকে বাঁচাতে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) সদস্যদের কাছে করজোড় অনুরোধ করেছেন। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক বৈঠকে দুঃখ ভারাক্রান্ত চেহারায় অনেকটা কাকুতি-মিনতির সুরে কথা বলেন তিনি।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের জরুরি বৈঠকে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, তার দেশে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে সোমবার থেকে তিন দিনে অন্তত ৬২০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে বহু মানুষ। নিরপরাধ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পালাচ্ছে। ইসরায়েল আমাদের আকাশে তাদের যুদ্ধবিমান ও ড্রোন পাঠিয়ে আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের বিমান বোমাবর্ষণ, ইলেকট্রনিক ডিভাইসে হামলা এবং স্থল আক্রমণের হুমকির কারণে লেবাননের নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। এখনই উত্তেজনা প্রশমন জরুরি। আমি এই আগ্রাসন বন্ধ করার এবং আমার দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার সম্মানের জন্য আপনাদের (নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্র) স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ করছি।
নাজিব মিকাতি যখন এই বক্তব্য দিচ্ছেন তখনও লেবাননে ইসরায়েলি বিমান বোমা ফেলছিল। খবর আসে বুধবার তখন পর্যন্ত ৭২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও পরিষদের হতাহতদের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, এই প্রজন্মের লেবাননিরা সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন পার করছে। জাতিসংঘ আর কোনো সংঘাত চায় না।
এ সময় ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। এতে সমর্থন দেয় ১২ দেশ। পরে এক যৌথ বিবৃতিতে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও কাতার। তাতে বলা হয়, পাল্টাপাল্টি হামলা আর ইসরায়েল বা লেবাননের জনগণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ। সীমান্ত অঞ্চলে সংঘাত-শত্রুতা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধির অগ্রহণযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।
একুশে সংবাদ/জা.নি./সাএ
আপনার মতামত লিখুন :