ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শাস্তি হিসেবে ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের তেল বেচাকেনা এবং পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর আল জাজিরার। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও অর্থ বিভাগ শুক্রবার ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ঘোষণা করে। ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে তেল আবিব যখন দেশটির বিরুদ্ধে সামরিকভাবে জবাব দেয়ার কথা ভাবছে, তখন এ পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিল ওয়াশিংটন।
অক্টোবরের প্রথম দিনে ইরান ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। ইরান হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ও হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে। সেই হামলার জবাবে ইসরায়েল কড়া জবাব দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বাঁধ সেধেছে। দেশটি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও তেল স্থাপনায় হামলা করতে ইসরায়েলকে নিষেধ করে দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েলে গত ১ অক্টোবর ইরানের নজিরবিহীন হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, আমরা ইরানের কৃতকর্মের জন্য উপযুক্ত পরিণতি আরোপ করব। সে লক্ষ্যে, আমরা ইরানের সরকার ও তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নে অর্থায়ন, সন্ত্রাসী প্রক্সি ও অংশীদারদের সমর্থন করতে এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত স্থায়ী করতে ব্যবহার করে রাজস্বের প্রবাহকে ব্যাহত করার জন্য আজ পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
ওয়াশিংটন জানিয়েছে, শুক্রবারের পদক্ষেপগুলো ইরানের তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পগুলোকে এমন খাতের তালিকায় যুক্ত করেছে যা তেহরানকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক কর্মসূচিতে অর্থায়নের জন্য ব্যবহার করে। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুযোগ তৈরি করে দিল।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এমন একটি অবস্থান নিয়েছে—যা ইরানের অর্থনীতির পেট্রোলিয়াম বা পেট্রোকেমিক্যাল খাতের সঙ্গে যুক্ত নির্দিষ্ট যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুযোগ দেবে। এই উদ্যোগের আওতায় এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৬টি তেলবাহী জলযানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ ছাড়া আরও ১৭টি জলযানকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাব্য তালিকায় রেখেছে।
ইরানের তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প থেকে শুরু করে একগুচ্ছ খাত যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া নতুন এ পদক্ষেপের আওতায় পড়বে। অথচ আগে থেকেই ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতের ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ দৃশ্যত ইরানের রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরও জোরদার করা ও ইসরায়েলের প্রতি ওয়াশিংটনের অব্যাহত সমর্থন দিয়ে যাওয়ারই একটি বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :