ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, তার দেশটি সৃষ্টি হয়েছিল জাতিসংঘ গৃহীত একটি প্রস্তাবের ফলে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত শান্তিরক্ষীদের ওপর ইসরায়েলের গোলাবর্ষণের নিন্দাও জানিয়েছেন ফরাসি এই প্রেসিডেন্ট।
ফরাসি মিডিয়া রিপোর্টের বরাত দিয়ে বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যাকা ও লেবাননে ইসরায়েলের চলমান সামরিক আগ্রাসনে ক্ষুব্ধ ফরাসি প্রেসিডেন্ট। সংঘাত বন্ধে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেন, ইসরায়েলে অস্ত্র রফতানি বন্ধ করাই গাজা ও ইসরায়েলে সংঘাত বন্ধ করার একমাত্র উপায়। পাশাপাশি লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ইসরায়েলি হামলারও নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। এ কারণে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ওপর চরম ক্ষেপেছেন নেতানিয়াহু।
এবার নেতানিয়াহুকে আরো বড় হুঁশিয়ারি দিলেন ম্যাক্রোঁ। এএফপির প্রতিবেদন মতে, মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, জনাব নেতানিয়াহুর এটা অবশ্যই ভুলে গেলে চলবে না যে, তার দেশটা জাতিসংঘের একটি সিদ্ধান্তে তৈরি হয়েছিল।
ইসরায়েল তথা নেতানিয়াহুকে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এটা জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার সময় নয়।
১৯৪৭ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে দুই ভাগে ভাগ করে একটি ইহুদি রাষ্ট্র ও আরেকটি আরব রাষ্ট্র করার পরিকল্পনা করা হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়। নেতানিয়াহুকে জাতিসংঘের ওই সিদ্ধান্তের কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।
হামাসের অভিযানের পর গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গেও সংঘাত শুরু হয় দেশটির। এতদিন তা সীমিত পরিসরে থাকলেও গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে নজিরবিহীন বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
এরপর ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় স্থল অভিযান। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে বিমান হামলাও। এতে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭৪০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ। ১২ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এখন টার্গেট করা হচ্ছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের। গত এক সপ্তাহে তিনবার শান্তিরক্ষা মিশনের ঘাঁটি টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :