ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত এক মাসে অন্তত ২০ ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অনেকে।উপত্যকাটিতে নিযুক্ত বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে এই হতাহতের ঘটনাগুলো ঘটেছে।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব কর্মীরা তাদের নিজ বাড়িতে, বাস্তুচ্যুত শিবিরে এবং সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করার সময় নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের হামলায় অনেক সহায়তা কর্মীই তাদের পরিবারের সদস্য এবং নিকট আত্মীয়দের হারিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা অক্সফামের সঙ্গে কাজ করা চারজন প্রকৌশলী এবং আরো বেশ কয়েকজন কর্মীও নিহত হয়েছেন।
তারা গত ১৯ অক্টোবর খান ইউনিসের পূর্বে অবস্থিত খুজাতে পানির অবকাঠামো মেরামত করতে যাওয়ার সময় নিহত হন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় থাকার পরেও স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করে তাদের গাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। এটি বিশ্বের যে কোনো সংঘাতে রেকর্ড হওয়া সর্বোচ্চ সংখ্যা।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শেষ করার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি আরো বলেন, ইসরায়েল যদি খুব দ্রুত এই যুদ্ধ না থামায়, তাহলে দেশটিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মুখে পড়তে হবে দেশটিকে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে মঙ্গলবার ইসরায়েলের কৌশলগত সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী রন দারমারের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন।
ব্রাসেলসের সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ইসরায়েল আমাদের বলেছিল যে গাজায় তাদের সামরিক অভিযান চালানোর মূল লক্ষ্য হলো- হামাসকে অকার্যকর করা ও ৭ অক্টোবরের হামলার জন্য দায়ীদের হত্যা করা। ওয়াশিংটন মনে করে গাজায় ইসরায়েলের নেয়া দুটি লক্ষ্যই পূরণ হয়েছে ও এখন সময় এসেছে এই যুদ্ধ শেষ করার।
এদিন গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলকে বিশেষ সতর্কবার্তাও দেন ব্লিঙ্কেন। বলেন, ইসরায়েল যদি শিগগিরই এই যুদ্ধ না থামায়, তাহলে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধের মুখে পড়বে। আর যদি যুদ্ধ থামাতে চায়, তাহলে এই পরিস্থিতি থেকে তাদের বের করে আনার উপায়ও ওয়াশিংটনের হাতে রয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে ইসরায়েল যেমন সহজে এই যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসবে, তেমনি হামাসও আগের অবস্থায় ফিরে যেতে সক্ষম হবে না।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :