সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কিছু অসার প্রকল্পে তেল-সমৃদ্ধ দেশটির রাষ্ট্রীয় তহবিলের অপব্যবহারের পাশাপাশি অধিকারও লঙঘন করছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বুধবার একথা জানিয়েছে।
নিউইয়র্ক-ভিত্তিক সংস্থাটির ৯৩ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে বিষদ বিবরন দিয়ে বলা হয়েছে, কীভাবে মোহাম্মদ বিন সালমান পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (পিআইএফ) ওপর তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন, যে প্রতিষ্ঠানটি এখন এক দশক আগের ৮৪ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় প্রায় ৯২৫ বিলিয়ন মূল্যের সম্পদ পরিচালনা করছে। মানবাধিকার সংস্থাটি ২০১৭ সালে শুরু হওয়া হাই-প্রোফাইল দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সময় মোহাম্মদ সালমান অভিজাত সৌদিদের কোম্পানি ও সম্পদ জব্দ করেন বলে অভিযোগ এনে বলেছে যে, ওই বছরই তিনি তার পিতা বাদশাহ সালমানের উত্তরসূরি হিসেবে যুবরাজ (ক্রাউন প্রিন্স) মনোনিত হন। পরে পিআইএফ এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে কয়েকটির নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়।
প্রতিবেদনে পিআইএফ’র মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর তহবিল যুবরাজ মোহাম্মদের স্বপ্নের ‘ভিশন ২০৩০’এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে ব্যবহার করা হয়। সৌদি অর্থনীতিতে বৈচিত্র আনতে এই ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সৌদি মরুভূমিতে ভবিষ্যত মেগা-সিটি নিওম তার এই পরিকল্পনার মধ্যে অন্যতম । এ প্রকল্পের স্থানে বাসবাসরত সেখানকার বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হয়। উপকূলীয় শহর জেদ্দায় বিলাসবহুল বিপনীবিতান নির্মাণ ও পর্যটন উন্নয়নের পথ তৈরি করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হয়। এর ফলে সেখানকার মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পিআইএফ’র মাধ্যমে যুবরাজ সালমান তার একক সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক শক্তিগুলোকে একত্রিত করেছেন।
তবে পিআইএফ বিশ্বব্যাপী সৌদি আরবের সুনাম বাড়িয়ে দিতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। যার মধ্যে খেলাধুলায় বিশাল বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্বের শীর্ষ ফুটবলার, টেনিস তারকা, গলফার ও ফর্মুলা ওয়ানকে উপসাগরীয় রাষ্ট্রটিতে আকৃষ্ট করেছে। ফিফা কংগ্রেস ২০৩৪ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক সৌদি আরবের বিড আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সৌদি আরবই এ আয়োজনের একমাত্র প্রার্থী। সৌদি আরবে ২০৩৪ সালের বিশ্বকাপ আয়োজক হওয়া মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলির মধ্যে একটি।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :