ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের জন্য সম্প্রতি দেশটি সফরে যান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। এ সময় তার সঙ্গে ছিল এক রহস্যময় রুপালি রঙের স্যুটকেস। যা তিনি একমুহূর্তের জন্যও হাতছাড়া করেননি। এ ঘটনায় সেই স্যুটকেসটি নিয়ে দেখা দিয়েছে জল্পনা।
জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেকেই লক্ষ করেছেন, চ্যান্সেলর তার সঙ্গে একটি রহস্যময় স্যুটকেস নিয়ে এসেছিলেন, যা তিনি কখনোই হাতছাড়া করেননি। শলৎজকে একটি ট্রেন থেকে নামার পর তার হাতে একটি রুপালি স্যুটকেস দেখা যায়। সেটা তিনি তার কোনো সহযোগীর হাতেই দেননি; নিজে বহন করেছেন। তবে সেই স্যুটকেসে আসলে কী ছিল, সেই বিষয়টি নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।বিল্ড বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের আগেই শলৎজ ইউক্রেন সফর করতে চেয়েছিলেন। চ্যান্সেলর এই সফরে জানতে চান, সংঘাতের অবসান ঘটাতে ইউক্রেন কী করতে প্রস্তুত।
ইউরোপের হার্টল্যান্ড বলে পরিচিত জার্মানির চ্যান্সেলর নিজ দেশে রাজনৈতিক ডামাডোল ও টানাপোড়েনের মধ্যে গেছেন। কারণ, তার জোট সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে একটি দল। যার ফলে, জোট সরকারের ভবিষ্যৎ টালমাটাল হয়ে পড়েছে।
বিল্ড জানিয়েছে, জার্মানিতে শাসক জোট ভেঙে পড়ার আগে অর্থাৎ গত নভেম্বরের শুরুতেই শলৎজের ইউক্রেন সফর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
বিল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বুন্ডেসট্যাগ নির্বাচনের ৮৩ দিন বাকি থাকতে, শলৎজ স্বাভাবিকভাবেই একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চান—এখনো আমিই চ্যান্সেলর।’ মূলত নিজের অবস্থান জানান দিতেই শলৎজের এই সফর। ট্রাম্পের ইউক্রেন সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে আলোচনা শুরুর প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষাপটে জার্মান চ্যান্সেলর ইউক্রেনের স্বার্থ রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে জার্মান সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে।
ওলাফ শলৎজ ২ ডিসেম্বর কিয়েভে পৌঁছান। এটি গত আড়াই বছরের মধ্যে ইউক্রেনে তার দ্বিতীয় সফর। এর আগে তিনি ইউক্রেনকে ৬৫০ মিলিয়ন ইউরোর নতুন সহায়তা প্যাকেজ দেওয়ার ঘোষণা দেন।জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিটকো মুলার শলৎজের ইউক্রেন সফরের পর জানান, ইউক্রেনের জন্য ৬৫০ মিলিয়ন ইউরোর নতুন সহায়তা প্যাকেজে আইরিস-টি আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, লোপার্ড-১ ট্যাংক এবং গোয়েন্দা ও অ্যাটাক ড্রোন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই সফরে একপর্যায়ে শলৎজ ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট একটি হাসপাতালে যান। সেখানে তারা আহত ইউক্রেনীয় সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেই সফরের এক ছবিতে দেখা যায়, যুদ্ধক্ষেত্রে পা হারানো এক ইউক্রেনীয় সেনা জেলেনস্কিকে জড়িয়ে ধরছেন এবং শলৎজ তাদের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন। তিনজনই হাসছেন।
চ্যান্সেলর জানান, কিয়েভ সফরে তিনি ইউক্রেনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে চান এবং এটি স্পষ্ট করতে চান, ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে জার্মানি ইউরোপের প্রধান দেশ হয়েই থাকবে।তিনি আরো বলেন, কিয়েভ বার্লিনের ওপর নির্ভর করতে পারে। কারণ, জার্মান নেতৃত্ব ‘যা বলে তা করে এবং যা করে তা বলে’।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :