মিয়ানমারের একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) নিজেদের সদর দফতরের দখল হারানোর প্রায় ৩০ বছর পর সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে তা পুনরুদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে গোষ্ঠীটির নেতা সাও থামাইন তুন। মঙ্গলবার তিনি এই দাবি করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এএফপি।
এতে বলা হয়েছে, জোরপূর্বক সদর দফতর থেকে বের করে দেওয়া মিয়ানমারের জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) ৩০ বছর পর তাদের প্রধান কার্যালয়ের দখল পুনরুদ্ধার করেছে।
কেএনইউ নেতা সাও থামাইন তুন বলেছেন, কয়েকদিনের লড়াইয়ের পর থাইল্যান্ড সীমান্তের ম্যানারপ্লাতে অবস্থিত কেএনইউর সদর দফতরের দখল নিয়েছেন কেএনইউর যোদ্ধারা। জান্তা সৈন্যরা এখনও এটির দখল ফিরে পেতে চায় এবং তারা ড্রোন ব্যবহার করে আমাদের সৈন্যদের ওপর বোমা ফেলার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমাদের সৈন্যরা ইতোমধ্যে ঘাঁটিটির দখল নিয়েছেন।
কেএনইউর কয়েক দশকের সশস্ত্র সংগ্রামের সদর দফতর ও মিয়ানমারের তৎকালীন জান্তার বিরোধিতাকারী অন্যান্য ভিন্নমতাবলম্বী রাজনীতিকদের আবাসস্থল হিসেবে ম্যানারপ্লা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কারেন সংখ্যালঘুদের অধিকারের জন্য বছরের পর বছর ধরে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে লড়ছে গোষ্ঠীটি।
খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ কেএনইউর মাঝে বিভক্তি দেখা দেওয়ায় ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারের তৎকালীন জান্তা ও কেএনইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বৌদ্ধদের একটি দল ম্যানারপ্লার সদর দফতরের দখল নেয়। সেই জান্তাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযানের মুখে সেখানকার হাজার হাজার বাসিন্দা প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
ম্যানারপ্লা পতনের পর জান্তা বাহিনী এলাকাটির নাম পরিবর্তন করে কাইন রাজ্য রাখে। একইসঙ্গে জান্তা বাহিনীর মিত্র বৌদ্ধদের সংগঠন ডেমোক্র্যাটিক কাইন ম্যানারপ্লাতে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
সাও থামাইন তুন বলেন, কারেনদের জন্য ঐতিহাসিক এক স্থান ম্যানারপ্লা। সেখানে কেএনইউর প্রায় ১০০ সৈন্যকে সমাহিত করা হয়েছে। তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এলাকাটি আমাদের পুনর্নির্মাণ করা দরকার।জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, জান্তা-বিদ্রোহী লড়াইয়ে মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত ৩০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :