ভারতের আগ্রার জিম প্রশিক্ষক নিজেকে র-এর (গবেষণা ও বিশ্লেষণ উইং) এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার এক নারীর ওপর দফায় দফায় যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আগ্রা পুলিশ এই জিম প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং হত্যার হুমকির অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বরাতে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় অভিযুক্তের এক বন্ধুও জড়িত ছিলেন।
আগ্রা পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ৬৪ নম্বর ধারা (ধর্ষণ), ১২৩ নম্বর ধারা (বিষক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষতি করা), ৩৫১ (২) নম্বর ধারা (ফৌজদারি/হত্যার হুমকি), ৭৪ নম্বর ধারা (নারীর শ্লীলতাহানি করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ বা বল প্রয়োগ) এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৭ নম্বর ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
আগ্রার ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (ডিসিপি) সুরজ রাই বলেন, `প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে জিম প্রশিক্ষক ও তার বন্ধুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগকারীর বিবৃতি রেকর্ড করার জন্য তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন, তবে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।`
সিকান্দরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নীরজ শর্মা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত সাহিল শর্মা টিন্ডার নামক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ওই নারীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন এবং ২০২৪ সালের মার্চ মাসে আগ্রার একটি হোটেলে তার সঙ্গে দেখা করেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, সেই সময় সাহিল ওই নারীর পানীয়ের মধ্যে চেতনা নাশক মিশিয়ে তাকে সংজ্ঞাহীন করে ফেলেন এবং তারপর তার ওপর যৌন নির্যাতন চালান।চেতনায় ফিরে এলে অভিযুক্ত সাহিল নিজেকে র-এর এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন এবং তাকে ভয় দেখান। এমনকি তিনি তাদের বিয়ের কথাও বলেন।
কানাডায় ফিরে যাওয়ার পরেও সাহিল ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যান এবং প্রায়শই তাকে মনে করিয়ে দেন যে তিনি র-এর হয়ে কাজ করেন। আগস্ট মাসে সাহিল ওই নারীকে পুনরায় ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানান এবং তার মায়ের সঙ্গে পরিচয় করানোর কথা বলেন।
ভারতে আসার পর, ওই নারী অভিযোগ করেন যে সাহিল আগ্রা এবং নয়াদিল্লিতে তাকে একাধিকবার যৌন নির্যাতন করেন। এছাড়া সাহিল তার বন্ধু আরিফ আলীর সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় করিয়ে দেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, আরিফ একটি হোটেলের বাথরুমে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালান। পরে ওই নারী জানতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। তিনি সাহিলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু সাহিল তাকে আবার হুমকি দেন এবং তার ব্যক্তিগত ছবি অনলাইনে ফাঁস করে দেয়ার কথা বলেন। ওই নারী আরও অভিযোগ করেন, সাহিল তাকে হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট ও কল মুছে ফেলতে বাধ্য করেন। সাহিল দাবি করেছিলেন যে, তার পরিচয় গোপন রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, আরিফও সাহিলের কাছ থেকে প্রাপ্ত তার অশ্লীল ছবি দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করেন বলে অভিযোগ করেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :