মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং উত্তরাঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির (এমএনডিএএ) মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। গত শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় চলমান সংঘর্ষ বন্ধ করার লক্ষ্যেই এই চুক্তি করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কুনমিংয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষে যুদ্ধবিরতির এই সিদ্ধান্ত হয়। আলোচনায় উভয় পক্ষ শান্তি প্রতিষ্ঠায় চীনের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে এবং এই প্রচেষ্টাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে চলমান সংঘাত বন্ধ করা শুধু বিবদমান পক্ষগুলোর জন্য নয়, বরং আশপাশের দেশগুলোর জন্যও অত্যন্ত জরুরি।” তিনি উল্লেখ করেন, “এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি চীন ও মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।”
মাও নিং আরও জানান, “চীন মিয়ানমারের উত্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সংলাপ এবং সমঝোতার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে চীন প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং সহযোগিতা প্রদান করবে।”
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী এমএনডিএএ দীর্ঘদিন ধরেই দেশটির জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। এই গোষ্ঠীটি মিয়ানমারের অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠী থ্রি ব্রাদার্স অ্যালায়েন্সের অংশ। এই জোটে আরও রয়েছে তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ)।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই জোট মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এরই মধ্যে মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি সীমান্তবর্তী অঞ্চল দখল করেছে বিদ্রোহীরা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমএনডিএএ প্রধানত জাতিগত চীনা জনগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত। বিশ্লেষকদের মতে, জান্তাবিরোধী বাহিনীগুলোর অগ্রগতিতে চীন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই বাহিনীগুলো শুধু গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চল দখল করেই থেমে থাকেনি, বরং মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় শহর মান্দালয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরিতিতে রাজি করাল চীন।
একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :