ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পুষ্পক এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা সন্দেহজনক আগুনের গুজবে আতঙ্কিত হয়ে ট্রেনের জরুরি চেইন টেনে থামান। এরপর যাত্রীরা দ্রুত ট্রেন থেকে লাফিয়ে নামার চেষ্টা করেন। এসময় পাশের লাইনে বিপরীত দিক থেকে আসা কর্ণাটক এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আগুনের ভুয়া তথ্যের কারণে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। চলন্ত ট্রেন থামাতে কয়েকজন যাত্রী জরুরি চেইন টানেন। তাড়াহুড়ো করে অনেক যাত্রী চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়েন এবং পাশের লাইনে চলে আসেন। এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা কর্ণাটক এক্সপ্রেস তাদের ধাক্কা দেয়, যার ফলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পূর্ব দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অভিষেক ধনিয়া সাংবাদিকদের জানান, এই ঘটনার কোনো পূর্বসূত্র আমাদের কাছে ছিল না। প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে শুধু একটি সুটকেস ও একটি পুড়ে যাওয়া মরদেহ পাওয়া যায়। এরপর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হয়।
পুলিশ অফিসার আরও জানান, তারা হুন্দাই ভার্না একটি গাড়ির ওপর নজর দেয়। কারণ সুটকেসে মরদেহটি পাওয়ার পর সিসিটিভির ফুটেজে ওই এলাকা থেকে গাড়িটিকে চলে যেতে দেখা যায়। পরবর্তীতে পুলিশ গাড়িটির রেজিস্টার নম্বরে যোগাযোগ করে লোনি নামের এক বাসিন্দার খবর পায়। কিন্তু সে পুলিশকে জানায় গাড়িটি অমিত তাইরি নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়েছে।
পুলিশ ২২ বছর বয়সী অমিত তাইরিকে খুঁজে বের করে এবং তাকে জেল হাজতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে ওই মরদেহটি ২২ বছর বয়সী তার চাচাতো বোন শিল্পা পান্ডের। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল, গত এক বছর তারা একসঙ্গে থেকেছেন। কিন্তু শিল্পা তাকে বিয়ে করতে চাওয়ায় সে রাজি হয়নি।
পরবর্তীতে গত শনিবার রাতে অমিত মদ্যপ অবস্থায় ঘরে ফিরে এবং শিল্পার সঙ্গে ঝগড়া হলে সে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে মরদেহ ফেলে দেয়ার জন্য গাড়ি চালক ও বন্ধু অনুজ কুমারকে আনা হয়। তাকে সঙ্গে নিয়ে মরদেহ সুটকেটে ভরে ফেলে দেয়া হয়। এ ঘটনায় অনুজকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, শিল্পার মরদেহটি উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও ফেলে দেয়ার পরিকল্পনার ছিল অমিতের। কিন্তু ওই এলাকায় যেতে হলে পুলিশের দুটি চেকপয়েন্ট পার হতে হবে। এজন্য তারা মরদহটিকে কাছের কোথাও ফেলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর নির্জন এলাকায় গিয়ে পেট্রোল পাম্প থেকে ১৬০ রুপির পেট্রোর কিনে সুটকেস ভর্তি লাশে আগুন ধরিয়ে দেয়। গ্রেপ্তার আগে অমিত উত্তরপ্রদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :