ক্ষমতায় ফিরে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত কয়েক দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ বিভাগ (আইসিই)। রোববার (২৬ জানুয়ারি) পরিচালিত অভিযানে অন্তত ৯৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আইসিই জানিয়েছে, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অভিযান। এর আগে শনিবার ২৮৬ জন, শুক্রবার ৫৯৩ জন এবং বৃহস্পতিবার ৫৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ তথ্য জানিয়েছে এবিসি নিউজ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শিকাগো, নিউ জার্সির নিউআর্ক এবং মিয়ামিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে পরিচালিত এই অভিযানে একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা অংশ নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই অভিযান আরও কয়েক দিন ধরে চলতে পারে।
মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ বিভাগ (আইসিই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বার্তায় জানিয়েছে, রোববার এক দিনে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৯৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে শিকাগোসহ আটলান্টা, পুয়ের্তো রিকো, কলোরাডো, লস অ্যাঞ্জেলেস, অস্টিন এবং টেক্সাস শহরে বাড়তি তৎপরতা চালাচ্ছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা।
নির্বাচনী প্রচারে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপকহারে বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় ফিরে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এরই মধ্যে অভিবাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে ২১টি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন তিনি। শিকাগোতে পরিচালিত অভিযানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন ট্রাম্পের সীমান্তবিষয়ক উপদেষ্টা টম হোমান। তবে তার এই কঠোর পদক্ষেপ ডেমোক্র্যাট নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, শিকাগো পুলিশ এই অভিযানে অংশ নেয়নি। তিনি শহরের বাসিন্দাদের তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
মায়ামিতে রোববার একাধিক অভিযান চালানো হয় বলে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন জানিয়েছে। এই অভিযানে আইসিই-এর স্থানীয় কার্যালয় বিভিন্ন অভিযোগে অভিবাসীদের আটক করে। এক ব্যক্তি সিবিএস নিউজকে জানান, ‘আইসিই আমার স্ত্রীকে ধরে নিয়ে গেছে। এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক।’ তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রী নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন।
এদিকে, নিউইয়র্কের মেয়র রাস বারাকা জানান, একটি স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আইসিই কোনো পরোয়ানা ছাড়াই অভিবাসী এবং এক সাবেক সেনাকে আটক করেছে। তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের এমনভাবে আতঙ্কিত হতে দেওয়া হবে না।’
আইসিই প্রধান টম হোমান এই বিষয়ে বলেন, অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া অপরাধী অভিবাসীদের পাশাপাশি নথিবিহীন অভিবাসীরাও বহিষ্কৃত হবেন।
তবে, অভিবাসন অধিকারকর্মীরা আশঙ্কা করছেন যে, এই অভিযানের সময় বৈধ নাগরিকসহ অন্যরাও ভুলবশত আটক হতে পারেন। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, নিরপরাধ ব্যক্তিদেরও শিকার হতে হতে পারে।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :