ভারতের উত্তরপ্রদেশে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ জমায়েত কুম্ভমেলায় মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে পদদলনের ঘটনায় প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের তিনটি সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, পদদলনের পর নিকটবর্তী হাসপাতালের মর্গে ৪০টি মরদেহ আনা হয়েছে।
এর আগে বেসরকারি সূত্র জানায়, কুম্ভমেলায় পদদলনের ঘটনায় এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং অনেকেই আহত হয়েছেন। তবে রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ভারত সরকার আহত ও নিহতদের সংখ্যা লুকানোর চেষ্টা করছে এবং বিকেল পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংখ্যা প্রকাশ করেনি।
শ্বেতা ত্রিপাঠী নামের এক নারী বলেন, “আমরা দেখতে পাই মানুষ পড়ে যাচ্ছে। সামনে গিয়ে দেখি চারদিকে কাপড়, মানুষের দেহ, তাদের ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিস পড়ে রয়েছে। ঘটনা এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেল যে, আমি আর এটি সহ্য করতে না পেরে কান্না শুরু করি। সৌভাগ্যক্রমে আমার দলের কেউ আহত হয়নি। আমরা সবাই নিরাপদ আছি, কিন্তু আমি আর কখনো কুম্ভমেলায় আসব না।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা শিশু ও আত্মীয়দের তাদের প্রিয় মানুষদের মরদেহের পাশে কাঁদতে দেখেছেন।
কুম্ভমেলায় পুরো ভারত থেকে কোটি কোটি মানুষ অংশ নেন। সেখানে পবিত্র পানিতে ডুব দেন তারা। এই মেলায় হাজার হাজার হিন্দু সন্যাসী অবস্থান করেন। বলা হয়ে থাকে, হিন্দুদের সবচেয়ে বড় গণজমায়েত এটি।
প্রতি ১২ বছর পরপর পর কুম্ভমেলা হয়ে থাকে। আর ১৪৪ বছর অন্তর হয় মহাকুম্ভ মেলা। ধারণা করা হয়, এটি প্রায় ৮০০ বছরের পুরোনো একটি ঐতিহ্য।
সহস্রাব্দ প্রাচীন এই কুম্ভ মেলা গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর মোহনায় অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে পূণ্য লাভের আশায় হাজার হাজার মানুষ একসাথে স্নান করেন। হিন্দু ধর্মালম্বীরা মনে করেন গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতীর পবিত্র জলে স্নান করে মানুষ পাপ থেকে মুক্ত হয়। তীর্থযাত্রীরা সূর্যোদয়ের আগে পবিত্র ঠান্ডা পানিতে স্নান শুরু করেন। এবারের মেলায় ৪০ কোটি মানুষ অংশ নেবেন বলে ধারণা আয়োজকদের।
সূত্র: রয়টার্স
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :