সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের রাজনৈতিক দল বাথ পার্টি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে দেশটির বর্তমান প্রশাসন। একইসঙ্গে দেশটির সংবিধান বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া, সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীসহ সকল সশস্ত্র গোষ্ঠীও বিলুপ্ত করা হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রায় দুই মাস পর সাবেক বিরোধীদলীয় কমান্ডার এবং দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেতা আহমেদ আল-শারাকে ক্রান্তিকালীন সময়ের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া।
দামেস্ক থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা ওসামা বিন জাভেদ বলেন, "এটি একটি স্মরণীয় দিন। এটি দেশটির এগিয়ে যাওয়ার পথ আরও সুস্পষ্ট করলো, কারণ নতুন প্রশাসন কেমন হবে—তা নিয়ে এতদিন অনিশ্চয়তা ছিল।"
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সানা বুধবার কমান্ডার হাসান আবদেল গনির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আল-শারাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। এছাড়া আল-শারাকে ক্রান্তিকালীন পর্যায়ের জন্য একটি অস্থায়ী আইন পরিষদ গঠনেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন সংবিধান গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত সেই কাজটি সম্পাদন করবে তারা।
সিরিয়ার সংবিধান এবং আল-আসাদের বাথ পার্টির মতো সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তা বাহিনীসহ দেশটির সমস্ত সামরিক গোষ্ঠী ও সেইসাথে আল-শারার নিজস্ব হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-ও বিলুপ্ত করা হয়েছে। বাশার আল-আসাদের উৎখাতের আগে ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সিরিয়া শাসন করেছিল বাথ পার্টি।
আল জাজিরা বলছে, দামেস্কে একটি বৈঠকের সময় এই ঘোষণাগুলো দেওয়া হয়েছে। গত ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে আল-শারার এইচটিএস-এর সাথে লড়াই করা সশস্ত্র গোষ্ঠীর কমান্ডাররা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরার সংবাদদাতা ওসামা বিন জাভেদ বলেন, “(আল-শারা) তাদেরকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন যে- তারা শুধু প্রতিনিধিত্বই করবেন না বরং একটি নতুন সিরিয়ার অংশও হবেন তারা।”
অবশ্য সিরিয়ায় কবে নাগাদ নির্বাচন কবে হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ সিরিয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এখন পর্যন্ত কোনও সময়সূচি উল্লেখ করা হয়নি। আল-শারা এর আগে বলেছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে নির্বাচন আয়োজন করতে চার বছরের মতো সময় লাগতে পারে।
এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে সৌদি আরবের সম্প্রচারকারী আল আরাবিয়ার সাথে আলাপকালে আল-শারা বলেছিলেন, সিরিয়ায় একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে তিন বছর সময় লাগতে পারে।
তিনি বলেন, সম্ভবত চার বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কারণ দেশে যোগ্য ভোটারের সংখ্যা নির্দিষ্ট করার জন্য নতুন করে আদমশুমারি করা দরকার। যেকোনও অর্থবহ নির্বাচনের জন্য ব্যাপকভিত্তিক আদমশুমারি পরিচালনা করতে হবে বলেও সেসময় জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :