প্রায় ১৫ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা। যুদ্ধবিরতির পর এর পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে, যার মূল বিষয় হলো—গাজা পুনর্গঠনে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও বিশ্বব্যাংকের এক যৌথ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা পুনর্গঠনে ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ প্রয়োজন হবে।
‘দ্য গাজা অ্যান্ড ওয়েস্ট ব্যাংক ইন্টেরিম র্যাপিড ড্যামেজ অ্যান্ড নিডস অ্যাসেসমেন্ট’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাদের হিসেব মতে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত ৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গবেষকরা হিসাব-নিকাশ করে বলেছেন, গাজা পুনর্গঠনে এখন আগামী ১০ বছরে ৫ হাজার ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এরমধ্যে কেবল প্রথম তিন বছরেই দরকার হতে পারে প্রায় দু’হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বিপুল খরচ জোগাতে বেশকিছু দাতা ও অন্যান্য আর্থিক উৎস ও বেসরকারি খাতের সম্পদ থেকে তহবিল দরকার হবে। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে গাজায় নির্মাণের জিনিসপত্র সরবরাহ ব্যবস্থাও উন্নত হতে হবে।
আইআরডিএনএ বলেছে, গাজায় ধ্বংস হয়েছে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২,৯২,০০০’রও বেশি ঘরবাড়ি। ৯৫ শতাংশ হাসপাতালই হয়ে পড়েছে অকার্যকর। স্থানীয় অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ৮৩ শতাংশ।
গাজা পুনর্গঠনে প্রয়োজনীয় মোট তহবিলের অর্ধেকেরও বেশি অর্থাৎ, ২ হাজার ৯৯০ কোটি ডলার খরচ হবে ধসে যাওয়া ঘরবাড়ি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণে। আর গাজার ধ্বংস হয়ে যাওয়া আবাসিক হাউজিংগুলো নতুন করে গড়ে তুলতে খরচ হবে ১ হাজার ৫২০ কোটি ডলার।
এছাড়া, ১ হাজার ৯১০ কোটি ডলার খরচ হবে গাজার সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে। যার মধ্যে আছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য ও ধসে পড়া শিল্প খাত।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের আবাসিক এবং মানবিক সমন্বয়কারী মুহান্নাদ হাদি বলেছেন, ‘সামনে বিপুল পুনরুদ্ধার এবং পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফিলিস্তিনিদের যৌথ পদক্ষেপের প্রয়োজন হবে। একটি টেকসই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া গাজার দুই মিলিয়ন মানুষের আশা, মর্যাদা এবং জীবিকা পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
একুশে সংবাদ/ক.ব/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :