বিজ্ঞানী ও উৎপাদকরা বছরের পর বছর ধরে প্রচলিত প্লাস্টিকের পরিবেশবান্ধব বিকল্পের সন্ধানের পর জাপানের একদল গবেষক জানিয়েছেন, তারা এমন এক ধরনের প্লাস্টিক তৈরি করেছেন, যা একেবারে সমুদ্রে দ্রবীভূত হবে। এমনকি প্লাস্টিক গলে গিয়ে মাটিতে মিশে একটি রাসায়নিক উপাদান তৈরি করবে; যা সার হিসেবে মাটিকে উর্বর রাখতে সহায়তা করে।
জাপানি এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া বিজ্ঞানী তাকুজো আইদা বলেন, নতুন এই উপাদান দিয়ে আমরা প্লাস্টিকের নতুন একটি পরিবার বানিয়েছি; যা শক্তিশালী, স্থিতিশীল, পুনর্ব্যবহারযোগ্য। বহুমুখী কাজে ব্যবহারের উপযোগী এই প্লাস্টিকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি কোনও ধরনের মাইক্রোপ্লাস্টিক তৈরি করে না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে এখনও পুনর্ব্যবহারযোগ্য কিছু প্লাস্টিক আছে। তবে এসব প্লাস্টিকের প্রধান সমস্যা হলো, এই প্লাস্টিক যখন সমুদ্রের পানিতে চলে যায়, তখন সেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়ে যায় না। আবার কিছু প্লাস্টিক আছে যা ভেঙে না গিয়ে ৫০০ বছরের বেশি সময় পর্যন্ত পানিতে টিকে থাকতে পারে।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য জাপানের রিকেন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরনের প্লাস্টিক তৈরি করেছেন; যা শক্ত থাকবে এবং মাটি ও সমুদ্রের পানির মতো পরিবেশে পুরোপুরি মিশে যাবে। এমনকি এই প্লাস্টিকের কোনও মাইক্রোপ্লাস্টিক অবশিষ্ট থাকবে না।
বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন, নতুন এই প্লাস্টিক লবণপানিতে রাখার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙে যেতে শুরু করে। এছাড়া মাটিতে রাখা হলে নতুন এই প্লাস্টিক গলে গিয়ে একটি রাসায়নিক উপাদান তৈরি করে; যা সার হিসেবে মাটিকে উর্বর রাখতে সহায়তা করে।
প্রসঙ্গত, প্রত্যেক বছর লাখ লাখ টন প্লাস্টিকের শেষ গন্তব্য হয় সমুদ্রে; যার বেশিরভাগই বায়োডিগ্রেডেবল নয়। যে কারণে এই প্লাস্টিক ভেঙে গিয়ে কাগজ কিংবা খাবারের মতো পচে যায় না, বরং শত শত বছর ধরে পরিবেশের মাঝে টিকে থাকে। পানীয়র বোতলের মতো বড় প্লাস্টিক ভেঙে ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হলে, সেগুলোকে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলা হয়। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক বন্যপ্রাণী খেয়ে ফেলতে পারে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :