সিরিয়ায় টানা চতুর্থ দিনের মতো নিরাপত্তা বাহিনী ও আসাদপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত আছে। চলমান সংঘাতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩শ’ ছাড়িয়েছে। এদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে, গেল চারদিনে দেশটিতে মারা গেছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। অস্ত্রধারীরা ঘরে ঢুকে মানুষ হত্যা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য মতে, গত চার দিনে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১ হাজার ৩শ’ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৯শ’ জনই বেসামরিক নাগরিক। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংস্থাটি।দামেস্ক থেকে এএফপি আজ এই খবর জানায়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘অস্ত্রধারীরা ঘরে ঘরে ঢুকে মানুষ হত্যা করছে। বুস্তান আল-বাশা গ্রামে আমার চাচি থাকেন। তার সব প্রতিবেশীকে হত্যা করা হয়েছে।’
নিজেদের সিরিয়ার বর্তমান শাসকগোষ্ঠী হায়াত আল-শামের (এইচটিএস) যোদ্ধা দাবি করা এসব অস্ত্রধারী ওই প্রত্যক্ষদর্শীর বাসায়ও তল্লাশি চালান। তাদের মহল্লা থেকে ২০টি গাড়ি নিয়ে যান।অস্ত্রধারীরা নিজেদের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর অনুসারী দাবি করলেও অনেকে বলছেন, এরা এইচটিএসের যোদ্ধা দাবি করলেও তা সত্যি নয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সংঘাত প্রবণ এলাকায় হাজার হাজার সরকারি বাহিনীর সদস্য পাঠানো হয়েছে। বাশার পন্থীদের দমনে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও কামান ব্যবহার করা হচ্ছে। বাশারের অনুসারীরা আলাউত সম্প্রদায়ের বাসিন্দা। আসাদের পরিবারও এই সম্প্রদায়ের।
চলমান পরিস্থিতির মধ্যেই এদিন একটি মসজিদে দেয়া বক্তব্যে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান আহমেদ আল-শারা। সাধারণ মানুষকে যারা নিশানা করছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শারা।
তিনি বলেন, এই মসজিদে আমরা ভয়ের মধ্যে নামাজ পড়তে অভ্যস্ত। সিরিয়ায় বর্তমানে যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলো আগে আমরা যেসব চ্যালেঞ্জ অনুমান করেছিলাম তারই অংশ। আমাদের জাতীয় ঐক্য ও দেশের শান্তি রক্ষা করতে হবে। যেন আমরা মিলেমিশে বাস করতে পারি। সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে রোববার রাজধানী দামেস্কে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মানবাধিকার কর্মীরা। বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় শহর লাতাকিয়া ও তারতুসে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত যোদ্ধারা সমন্বিতভাবে হামলা শুরু করে। সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো দ্রুত পাল্টা হামলা শুরু করে। সঙ্গে নতুন সরকারের প্রতি অনুগত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদেরও এই অভিযানে যুক্ত করা হয়।
এদিকে, সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে একমত হয়েছে তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক ও জর্ডান। রোববার আম্মানে দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেয়া হয়।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :