ককেশাসের দুই প্রতিবেশী আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া দীর্ঘ চার দশকের সংঘাতের অবসান ঘটাতে গত সপ্তাহে একমত হয়েছে। বৃহস্পতিবার আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান আজারবাইজানকে একটি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। ইয়েরেভান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
আজারবাইজানের আর্মেনীয়-জনবহুল অঞ্চল কারাবাখ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাকু ও ইয়েরেভান দুইবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষের দিকে একবার এবং ২০২০ সালে একবার এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আজারবাইজান সামরিক অভিযানের মাধ্যমে পুরো অঞ্চল দখল করে নেয়।
উভয় দেশই বারবার বলেছে, তাদের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি বিস্তৃত শান্তি চুক্তি সম্ভব। কিন্তু আগের আলোচনায় খসড়া চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। গত শুক্রবার দুই দেশ জানিয়েছে, তারা সংঘাত সমাধানের জন্য আলোচনা শেষ করেছে। উভয় পক্ষই সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পাশিনিয়ান টেলিগ্রামে এক ইংরেজি পোস্টে বলেছেন, ‘আর্মেনিয়া-আজারবাইজান শান্তি চুক্তির খসড়ায় একমত হয়েছে এবং স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে।’ তিনি বলেন, আমি আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভকে প্রস্তাব করছি, একমত হওয়া খসড়া শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষরের জন্য যৌথ আলোচনা শুরু করুন।’
সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তিটি ওই অঞ্চলের একটি বড় অগ্রগতি হবে, যেখানে রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক প্রভাব বিস্তারের জন্য লড়াই করছে। বাকু স্পষ্টভাবে প্রত্যাশা করেছে, আর্মেনিয়া তার সংবিধান থেকে ১৯৯১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের একটি রেফারেন্স বাদ দেবে, যা কারাবাখের ওপর পরোক্ষভাবে আঞ্চলিক মালিকানা দাবি করে।
যেকোনো সাংবিধানিক সংশোধনের জন্য একটি জাতীয় গণভোটের প্রয়োজন হবে, যা চুক্তির চূড়ান্তকরণকে আরো বিলম্বিত করতে পারে। আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী শাসনের তিন দশক পর পাশিনিয়ান কারাবাখের ওপর বাকুর সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছেন, যা সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হচ্ছে।
আর্মেনিয়া গত বছরও আজারবাইজানকে চারটি সীমান্ত গ্রাম ফিরিয়ে দিয়েছে, যা তারা কয়েক দশক আগে দখল করেছিল।বাকু কারাবাখ দখলের পর এক লাখেরও বেশি আর্মেনীয় জাতিগত নৃগোষ্ঠী সেখানে থেকে পালিয়ে গেছে। ওয়াশিংটন, ব্রাসেলস ছাড়াও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মতো ইউরোপীয় নেতারা এই সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা সকলেই সংঘাতে বিভিন্ন সময়ে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করেছেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :