২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে থেকেই ভারত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিল। তবে এ বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দেশটির পররাষ্ট্রবিষয়ক পার্লামেন্টারি পরামর্শক কমিটির বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
শনিবার (২২ মার্চ), ভারতীয় সংবাদমাধ্যম `দ্য হিন্দু` প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, জয়শঙ্করের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরিস্থিতিই প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল।
জয়শঙ্কর জানান, বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতা সম্পর্কে ভারতীয় প্রশাসন আগে থেকেই অবগত ছিল। তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক বক্তব্যের উল্লেখ করেন।
জাতিসংঘ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল যে, যদি তারা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়, তাহলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করলেও, শেখ হাসিনাকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ায় ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে ভারত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রকে ঢাকায় পাঠায়, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য।
তবে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক (BIMSTEC) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে কি না, সে বিষয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
জয়শঙ্কর আলোচনায় বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে ‘বহিরাগত শক্তির’ ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি চীনকে ‘প্রতিপক্ষ’ নয়, বরং ‘প্রতিযোগী’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
আলোচনায় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নিয়েও কথা বলেন জয়শঙ্কর।
২০১৪ সালের পর থেকে সংস্থাটির কোনো শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।
২০১৬ সালে পাকিস্তানে নির্ধারিত ১৯তম সার্ক সম্মেলনে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত, কারণ ওই বছর উরিতে ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা হয়েছিল।
এরপর থেকে ভারত বিমসটেককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, ফলে সার্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
একুশে সংবাদ// য.ট/ এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :