ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক রোববার মিশরে যাত্রা বিরতি কালে গাজায় নতুন করে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান। এরপর তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি পুনর্বহালের লক্ষ্যে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উদ্দেশে রওয়ানা দেন।কায়রো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপে আলোচনা স্থগিত হওয়ার পর মঙ্গলবার ইসরাইল গাজা উপত্যকায় তীব্র বিমান হামলা শুরু করে এবং পরে স্থল অভিযান চালায়। কায়রোতে মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তির সাথে এক সংবাদ সম্মেলনে ইইউর কাজা কালাস বলেন, আমরা ইসরাইলের পুনরায় শত্রুতা শুরুর তীব্র বিরোধিতা করি, যার ফলে গাজায় ভয়াবহ প্রাণহানি ঘটে। এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। নতুন যুদ্ধে উভয় পক্ষই হেরে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে, এটা খুবই স্পষ্ট যে হামাসকে অবশ্যই সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে ও ইসরাইলকে অবশ্যই গাজায় মানবিক সহায়তা সম্পূর্ণরূপে পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং আলোচনা পুনরায় শুরু করতে হবে।’
কালাসের টিম পরে নিশ্চিত করেছে যে, তিনি মিশর ছেড়ে ইসরাইলে পৌঁছেছেন।তার কার্যালয় জানিয়েছে, সোমবার সেখানে এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোয় আলোচনার সময় তিনি অবিলম্বে ‘যুদ্ধবিরতি-জিম্মি মুক্তি চুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে ফেরত আসার আহ্বান জানাবেন’ বলে আশা করা হচ্ছে।
গাজায় এবং সমগ্র অঞ্চলে মানবিক সহায়তার নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকার এবং টেকসই বিতরণের গুরুত্বও তুলে ধরবেন কালাস।জাতিসংঘ শুক্রবার বলেছে, ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির পর ইসরাইল পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে গাজা এক ‘দুঃস্বপ্নের’ মুখোমুখি হয়েছে।
সাহায্য কর্মীরা সতর্ক করেছেন, যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পর্যায়ে আলোচনায় অচলাবস্থার কারণে এই মাসের শুরুতে গাজায় সাহায্য ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ইসরাইলের সিদ্ধান্তের ফলে আরো খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার ও বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিডের সাথে ক্যালাসের দেখা করার কথা রয়েছে।
তবে তিনি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে দেখা করবেন না। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের জন্য’ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।তার কার্যালয় জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে, ক্যালাস ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফার সাথে আলোচনা করবেন।
ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তাবলী পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাস, একে সকল পক্ষের স্বাক্ষরিত চুক্তির লঙ্ঘন বলে প্রত্যাখ্যান করে।যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে গাজায় গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসা সহায়তা প্রবেশ এবং ইসরাইলি কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের জন্য ইসরাইলি জিম্মিদের বিনিময় সম্ভব হয়েছিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলি সীমান্তে অভিযান চালায়। ইসরাইলি পরিসংখ্যান অনুসারে, ওই হামলায় ১,২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। রোববার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলের পরবর্তী বোমাবর্ষণ ও স্থল আক্রমণে কমপক্ষে ৫০,০২১ জন নিহত হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :