যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত দক্ষিণ আফ্রিকার দূত ইব্রাহিম রাসুল নিজ দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে ব্যাপক অভ্যর্থনা পেয়েছেন।গতকাল সোমবার ইব্রাহিম রাসুল এবং তার স্ত্রী রসিদা কেপটাউন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানে জমায়েত হওয়া মানুষ তাদের ঘিরে ধরেন। এত বেশি মানুষ ভিড় করেছিলেন যে তাদের হেঁটে বের হওয়ার পথ তৈরি করার জন্য পুলিশ পাহারার প্রয়োজন হয়েছে। একটি মেগাফোন ব্যবহার করে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন রাসুল।জোহানেসবার্গ থেকে এএফপি আজ এই খবর জানায়।
ইব্রাহিম বলেন, ‘অবাঞ্ছিত ঘোষণা করাটা অপমানজনক। তবে আপনারা যখন এভাবে জমায়েত করেন এবং এভাবে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান, তখন আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার বিষয়টিকে আমি সম্মানের প্রতীক হিসেবে দেখছি।’
ইব্রাহিম রাসুল আরো বলেন, ‘আমরা নিজেদের ই”ছায় দেশে ফিরিনি। তবে দেশে ফেরার জন্য আমাদের কোনো ধরনের অনুশোচনা নেই।’
রাসুলকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আমেরিকা বিরোধী অবস্থান বজায় রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন ট্রাম্প। গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় সব ধরনের তহবিল বন্ধ করে দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ও ইরানকে সমর্থন দিচ্ছে এবং দেশে শ্বেতাঙ্গবিরোধী নীতি অনুসরণ করছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) একটি মামলা দায়ের করে। এতে অভিযোগ করা হয়, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ চালাতে গিয়ে ইসরাইল জেনোসাইড কনভেনশনের বিধিনিষেধগুলো লঙ্ঘন করছে। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার ওই মামলার পক্ষে আরো ১০টির বেশি দেশ সমর্থন জানায়।
গতকাল বিমানবন্দরে জড়ো হওয়া জনগণের উদ্দেশ্যে রাসুল বলেন, ‘আমরা একথা বলতে চাইনা যে দক্ষিণ আফ্রিকা আমেরিকা বিরোধী। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো ছুড়ে ফেলার জন্য আপনাদের আহ্বান করতে আমরা এখানে আসিনি।’ এক সপ্তাহ আগে ট্রাম্প প্রশাসন রাসুলকে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোষণা করে। তার কূটনৈতিক দায়মুক্তি ও সুযোগ-সুবিধা বাতিল করা হয় এবং তাকে দেশত্যাগের জন্য শুক্রবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর গতকালই প্রথম প্রকাশ্যে কথা বললেন রাসুল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, রাসুল হলেন জাতি বিদ্বেষী রাজনীতিবিদ, যিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্পকে ঘৃণা করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্ধ লক্ষ মানুষ হত্যাকারী ইসরাইলি প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার কারণেই মূলত ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে। ইব্রাহিম রাসুলকে বহিষ্কার করে ট্রাম্প দখলদার রক্তপিপাসু ইসরাইলের আরো প্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেছে মাত্র। ইতিহাস একদিন আমেরিকা ও ইসরাইলের এসব অন্যায়ের জবাব দেবে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :