মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্কনীতি বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। একের পর এক নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নে ব্যস্ত সময় পার করছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে সাম্প্রতিক এক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার পণ্যের ওপর এই শুল্ক নীতি কার্যকর হবে না।
মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ তাদের নতুন নির্দেশনায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। উল্লেখযোগ্য যে, মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের অধিকাংশ পণ্যই উৎপাদিত হয় চীনে, যা এই সিদ্ধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
শনিবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশি সময়) মার্কিন প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দপ্তরের নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারের ওপর নয়া শুল্কনীতি কার্যকর হবে না।
কয়েক দিন আগেই আমেরিকার বাজারে চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্প ১৪৫ শতাংশ চাপিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থা ‘অ্যাপল’-এর আইফোন এবং অন্য পণ্যগুলোর বেশিরভাগই উৎপাদিত হয় চীনে। সে ক্ষেত্রে চীনা পণ্যে চড়া হারে শুল্কের কারণে আমেরিকার বাজারে ‘অ্যাপল’-এর পণ্যের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মোবাইল এবং কম্পিউটারকে আমদানি শুল্কের নয়া নীতি থেকে বাদ দিলো ট্রাম্প প্রশাসন।
সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অ্যাপল’-এর ৮০ শতাংশেরও বেশি পণ্য চীনে তৈরি হয়। ওই মার্কিন বহুজাতিক সংস্থার প্রায় ৮০ শতাংশ আইপ্যাড তৈরি হয় চীনে। অ্যাপল যত কম্পিউটার তৈরি করে, তার অর্ধেকেরও বেশি তৈরি হয় চীনেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও চাইছিলেন যাতে ‘অ্যাপল’ এবং অন্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলো আমেরিকাতেই তাদের পণ্য উৎপাদন করে। চলতি সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব ক্যারোলিন লেভিটও সেই আভাস দিয়েছিলেন।
তিনি জানিয়েছিলেন, আমেরিকার মাটিতে ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘অ্যাপল’। সে ক্ষেত্রে মার্কিন শুল্কের কারণে আমদানির খরচ সামলাতে আমেরিকার মাটিতেই অ্যাপল নিজেদের পণ্য তৈরি করবে বলে আশা করছেন ট্রাম্প।
তবে আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দপ্তরের নতুন গাইডলাইন থেকে অনেকেই অনুমান করছেন, ওই ভাবনাচিন্তা থেকে হয়ত সরে এসেছে মার্কিন প্রশাসন। সম্ভবত সেই কারণেই মোবাইল এবং কম্পিউটারের ওপর শুল্কে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোবাইল, কম্পিউটারের পাশাপাশি সৌর ব্যাটারি, টেলিভিশনের ডিসপ্লে, মেমোরি কার্ড, সেমিকন্ডাক্টর-সহ বেশ কিছু বৈদ্যুতিক পণ্যকেও নয়া শুল্কনীতির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এই পণ্যগুলোর বেশিরভাগেরই আমেরিকায় খুব বেশি উৎপাদনকেন্দ্র নেই।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :