মালি, লেবানন এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না আসায় এবার এসব মিশনে অর্থায়ন কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের বাজেট অফিসের একটি পরিকল্পনা দল এই সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আমেরিকান সময় অনুযায়ী গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের ব্যর্থ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত অর্থায়ন নিয়ে নতুন করে ভাবার পক্ষপাতী।
রয়টার্স বলছে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করে আমেরিকা। জাতিসংঘের নিয়মিত মূল বাজেট ৩৭০ কোটি মার্কিন ডলার। এই অর্থের ২২ শতাংশ দেয় আমেরিকা। আর শান্তিরক্ষা মিশনে বার্ষিক খরচ ৫৬০ কোটি ডলারের ২৭ শতাংশ দেয় ওয়াশিংটন। এই অর্থ দেশটিকে দিতেই হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই আমেরিকা শীর্ষে, দ্বিতীয় স্থানে চীন।
এই বাজেট কাটতে হবে–আগামী অর্থবছরের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন এই প্রস্তাবই দিয়েছে হোয়াইট হাউসের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট (ওএমবি। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই অর্থবছর শুরু হবে। তাতে স্বরাষ্ট্রের বাজেট অর্ধেক কমানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। নতুন বাজেট কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে এবং আইনপ্রণেতারা প্রশাসনের প্রস্তাবিত তহবিলের কিছু বা সমস্ত অংশ পুনরুদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি কূটনীতি এবং সহায়তা বাজেটের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমানোর প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এই কংগ্রেসই ফেডারেল সরকারের বাজেট নির্ধারণ করে।
আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের জন্য অবদান (সিআইপিএ) বন্ধ করার প্রস্তাব করেছে হোয়াইট হাউসের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট (ওএমবি)। এই প্রস্তাবের ব্যাপারে গত মঙ্গলবারই মন্তব্য করার কথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। নতুন এই প্রস্তাবের ব্যাপারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো চূড়ান্ত পরিকল্পনা নেই, চূড়ান্ত বাজেট হয়নি।’
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাজেট থেকে নয়টি মিশনে তহবিল সরবরাহ করা হয়। এগুলো হলো মালি, লেবানন, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান, পশ্চিম সাহারা, সাইপ্রাস, কসোভো, সিরিয়া ও ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমি। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ সুদান ও সুদান দ্বারা যৌথভাবে পরিচালিত প্রশাসনিক অঞ্চল আবেই।
এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার মন্তব্য করতে রাজি হননি জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। মার্কিন সরকারের অভ্যন্তরীণ বিতর্কের অংশ বলে মনে হচ্ছে–এমন একটি ফাঁস হওয়া ডকুমেন্ট সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে বলেছিলেন, সংকটের মধ্যেই এই বছর বিশ্বের প্রথম সারির এই সংস্থাটির ৮০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এ সময় তিনি দক্ষতা বাড়ানো এবং খরচ কমানোর উপায় খুঁজছেন বলেও জানান।
একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :