জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এই ঘটনার জেরে ভারত যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তখন পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) একগুচ্ছ কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সভাপতিত্বে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রধান সিদ্ধান্তসমূহ:
- ভারতীয় বিমানের আকাশপথে নিষেধাজ্ঞা: পাকিস্তানের আকাশসীমায় ভারতীয় মালিকানাধীন বা ভারত দ্বারা পরিচালিত কোনো বিমান প্রবেশ করতে পারবে না।
- সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ: ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সব বাণিজ্য স্থগিত করা হয়েছে। এমনকি পাকিস্তান হয়ে তৃতীয় কোনো দেশের পণ্যও ভারতে যাওয়া বা সেখান থেকে আসা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- সিমলা চুক্তি বাতিল: ১৯৭২ সালের ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান।
- দূতাবাসে কর্মী সীমিতকরণ: পাকিস্তানে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসে কর্মরত সামরিক উপদেষ্টাদের ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং কর্মকর্তা সংখ্যা ৩০-এ নামিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা ৩০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
সার্ক ভিসা সুবিধা বাতিল: সার্ক চুক্তির আওতায় থাকা বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ভারতে অবস্থানরত ভারতীয়দের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তান সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করার যেকোনো পদক্ষেপকে তারা ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে বিবেচনা করবে এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানাবে।
গত মঙ্গলবার ভারতের পেহেলগাম এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৫ জন ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিক নিহত হন। ভারত এই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে নানা কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানি ভিসা বাতিল এবং সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া।
পাকিস্তান বরাবরের মতো ভারতের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এসব পদক্ষেপকে ‘শিশুসুলভ’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছে।
একুশে সংবাদ//ঢ.প//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :