নদী মাতৃক আমাদের এই দেশ, মাছে ভাতে বাঙালি এই কথাটি এখন শুধু বই-পুস্তকেই সীমাবদ্ধ। বাস্তব চিত্র পুরোটা ভিন্ন। ধান নদী খাল- এই তিনে বরিশাল। ২০২৪ সালে এসে সেই খালে, নদীতে নাই পানি। তাই কমে গেছে মাছ। কিছু নদ-নদী খালে পানি এলেও তেমন একটা দেখা নেই দেশীয় মাছের। তাই চাষের মাছের ওপর নির্ভর করে আমিষের ঘাটতি মেটাতে হচ্ছে।
বিভিন্নস্থানে অবৈধভাবে নদী দখল ও অপরিকল্পিত বাঁধের ফলে নদী হারাচ্ছে তার চির-চেনা যৌবন। মাছ ধরতে বিভিন্ন ফাঁদের অপব্যবহার কারণে নদীতে দেশীয় মাছের উৎপাদন দিনকে দিন কমে আসছে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়, অবৈধ কারেন্ট জাল ও প্রচুর পরিমাণে কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে খাল, বিল, পুকুর, ডোবাগুলোতে দেশীয় মাছের বিলুপ্ত হয়েছে। অপরদিকে গ্রাম্য অঞ্চল গুলোতে খাল-বিল, পুকুর ডোবার গভীরতা যেমন কমে আসছে ঠিক একইভাবে ভরাটের কারণে দেশীয় মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। এখন বাঙালিদের আমিষের চাহিদা মেটাতে বিদেশি মাছের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
বরিশালের ঐতিহ্যবাহী উপজেলা উজিরপুর থেকে মানুষের মুখে বলা উচ্চারণ থেকে কিছু মাছের নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। যে সব মাছের নাম উজিরপুর এলাকায় অন্য এলাকার থেকে একটু ভিন্নতা দেখা যায় সেগুলোই মূলত সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়েছে।
উটকাল/লাউয়্যা= টাকি মাছের মতোই তবে চটপটে ও লাফায়। ময়লা পুকুর ও ডোবায় বেশি দেখা যায়। ইশলা/ইলশা মাছ, কাজলি, কানা কৈ, করহিনা, কারফু খৈলা, গরই/টাহি/চ্যাঙ, গজাল=গজার, ঘুসা=চিংড়ি, চান্দা, চাপিলা, চ্যালা, ছ্যাপ চ্যালা, চ্যাকমাহা, চেউয়্যা, টাটকিনা, ডগরি, তিতপুডি, তারা বাইং, তেলাপুইয়া=তেলাপিয়া, থুইর্য=কাইক্যা, দারহিনা, নলা= ছোট রুই, নারকোলি চ্যালা, নায়লনটিকা, পোটকা, পোমা/পোয়া, ফলি, বুতকিনা, বুইচা, বুইতা, বুজজুরি/বুজুরি (ছোট ট্যাংরা), বাইং=বাইন/বাইম, বাতাসি, বাচা, বায়লা/বাইলা, বাঁশপাতা, মলান্তি, মিরহা=মৃগেল, মোজগুর=মাগুর, রুইত=রুই মাছ, লাটা, হোউল=শোল, হিং=শিং মাছ, হরপুডি, রিডা।
সংগ্রহ : শাহ আলম ডাকুয়া ও মোস্তাফিজুর রহমান জাকির
সংগ্রহস্থান: হস্তিশুন্ড, উজিরপুর, বরিশাল
সংগ্রহের সময়: অক্টোবর-২০২৪
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :