হত্যা মামলায় ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিলীপ কুমার আগরওয়ালার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিএনপিকর্মী হৃদয় আহম্মেদকে (১৬) গুলি করে হত্যার ঘটনায় এ মামলা হয়।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গতকাল মঙ্গলবার ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-১।
গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোরধী আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএনপিকর্মী হৃদয় আহম্মেদ (১৬) মারা যায়। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বিএনপির জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৬১ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভিকটিম মৃত হৃদয় আহম্মেদ (১৬) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি বিএনপির মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার একজন কর্মী। গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ও ছাত্র আন্দোলনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাদী ও হাজার হাজার আন্দোলনকারীর সঙ্গে হৃদয় আহম্মেদ বাড্ডা থানার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অংশগ্রহণ করে। আন্দোলন চলাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের নির্দেশে আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এজাহার নামীয় অপরাপর আসামিসহ ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের অংগ সংগঠনের নেতাকর্মী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক সব আসামি তাদের হাতে থাকা অবৈধ অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকেন। তাদের গুলিতে অনেক আন্দোলনকারী নিহত হন, অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় ছটফট করতে থাকেন।
এতে আরও বলা হয়, আসামিরা আন্দোলনবিরোধী স্লোগান দেন। তারা এলোপাতাড়ি গুলি করিতে থাকায় বাদী আত্মরক্ষার্থে পাশের গলির এক ভবনে আশ্রয় নেন। ওই ভবনে থাকা অবস্থায় বাদী মুহুর্মুহু গুলির শব্দ ও লোকজনের চিৎকারের আওয়াজে ভীত হয়ে পড়েন। কিছু সময় পর গুলির আওয়াজ বন্ধ হলে বাদী বাইরে এসে বাদীর সঙ্গী ভিকটিম হৃদয় আহম্মেদকে খুঁজতে থাকেন। দীর্ঘ সময় খোঁজ করে না পাওয়ার একপর্যায়ে লোক মুখে জানতে পারেন আসামিদের গুলিতে ও আক্রমণে বহু লোক হতাহত হয়েছেন। এদের কয়েকজনকে আফতাবনগরে নাগরিক স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। বাদী ওইদিন বিকেল ৪টায় হাসপাতালে গিয়ে হৃদয় আহম্মেদকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :