অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক দায়ের করা মামলার অভিযোগ গঠন ও মামলার সকল কার্যক্রম বাতিল করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই রায় ঘোষণা করেন।
এর মাধ্যমে হাইকোর্টের দেওয়া মামলাটি চলমান রাখার আদেশ বাতিল করে ড. ইউনূসের পক্ষে আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ।
মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন এবং ড. ইউনূসের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে, হাইকোর্টে মামলাটি বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় ড. ইউনূস আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হন। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর আপিল বিভাগ তার আপিলের অনুমতি দেন। শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৯ মার্চ রায় ঘোষণার জন্য ২৩ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত।
মামলার পটভূমি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৩০ মে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে অবৈধভাবে স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
২০২৩ সালের ১২ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ মামলার অভিযোগ গঠন করেন। এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ড. ইউনূসসহ সাতজন হাইকোর্টে আবেদন করেন, যা পরবর্তীতে ২৪ জুলাই খারিজ হয়ে যায়। এরপর আপিল বিভাগে আবেদন করলে, আপিল বিভাগ মামলাটি বাতিলের রায় দেন।
আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটির কোনো আইনগত ভিত্তি ছিল না। শ্রমিকদের অর্থ সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠানের অর্থ নয়। উদ্দেশ্য ছিল তাকে হয়রানি ও অপমান করা। আদালত সেটি বিবেচনায় নিয়েই মামলাটি বাতিল করেছেন।"
তিনি আরও জানান, “অধ্যাপক ইউনূস শুরু থেকেই বলে আসছিলেন—আইনের মাধ্যমে তিনি এই অভিযোগের মোকাবিলা করবেন এবং দোষী প্রমাণিত হলে সাজা ভোগ করতে রাজি।”
একুশে সংবাদ//ঢ.প//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :