ভারতীয় জনপ্রিয় শিল্পী সনু নিগমের মতো ‘একা থাকা ছিল ভালো সুখে তো ছিলাম’ বলে যারা আক্ষেপ করতে চান না, দিনটি আজ তাদের। হ্যাঁ, আজ একা থাকার দিন। আজ ‘সিঙ্গেল ডে’।
নব্বইয়ের দশকে চীনের নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১১ নভেম্বরকে সিঙ্গেল ডে হিসেবে উদযাপন করতে শুরু করেছিলেন। এর পেছনে তাদের চমৎকার যুক্তিও ছিল বটে। যুক্তিটি হচ্ছে, নভেম্বর ইংরেজি বর্ষের ১১তম মাস। আর ১১তম মাসের ১১তম দিন বেছে নিলে তা সংখ্যায় দাঁড়ায় ১১–১১। সব সংখ্যাই ১ হওয়াতে তা সিঙ্গেল বা একা থাকা ব্যক্তির প্রতিনিধিত্বকেই বুঝায়।
সেই থেকে দিনটি সিঙ্গেল ডে হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। দিনটি চীনের সিঙ্গেলরা বেশ সাড়ম্বরেই পালন করেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, চীনের সবচেয়ে বড় বেচাবিক্রির দিন অর্থাৎ বিগেস্ট শপিং ইভেন্ট কোনটি জানেন? ব্ল্যাক ফ্রাইডে? না। সাইবার মানডে? না। প্রাইম ডে? অবশ্য না। চীনের সবচেয়ে বড় বেচাবিক্রির ইভেন্ট হচ্ছে সিঙ্গেল ডে। এই দিনে সবচেয়ে বেশি বেচাবিক্রি হয়।
চীনা পরামর্শক সংস্থা বেইন জানিয়েছে, গত বছর সিঙ্গেল ডে উপলক্ষে চীনে প্রায় ১৫৮ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি হয়েছে। এটি ব্ল্যাক ফ্রাইডের ও সাইবার মানডের বিক্রির তুলনায় চার গুণ বেশি। তবে দিনটি শুধু চীনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বিশ্বের আরও অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের নানা দেশের সিঙ্গেল তরুণ–তরুণী দিনকে নিজেদের বলে আপন করে নিয়েছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত ভ্যালেন্টাইন ডের পাল্টা দিন হিসেবে সিঙ্গেল ডে বেছে নিয়েছেন একা থাকা তরুণ–তরুণীরা। এই দিনে অবিবাহিত ব্যক্তিরা নিজেই নিজেকে নানা কিছু উপহার দেন। আবার পরিচিত ব্যাচেলরা মিলে পার্টির আয়োজনও করে থাকেন।
বিশ্বে এখনও অগণিত মানুষ রয়েছেন, যারা অবিবাহিত থাকতে চান। পুরুষ ব্যাচেলরা সংগীতশিল্পী নচিকেতার কন্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে চান- ‘পুরুষ মানুষ দুই প্রকার, জীবিত বিবাহিত।’ অর্থাৎ তারা বিয়ে করে মৃত হতে চান না। তারা সিঙ্গেল থেকে জীবিত থাকতে চান। আবার অনেক নারী রয়েছেন যারা মনে করেন ‘সংসার মানে ব্যর্থ-বাসনা, বেদনার জলাভূমি’। নির্মলেন্দু গুণের এই পঙক্তিকে আপ্তবাক্য মনে করে তাঁরা সংসারের যাঁতাকলে ঢুকতে চান না। থাকতে চান আজীবন সিঙ্গেল। এই সব নারী–পুরুষদের জন্যই আজকের সিঙ্গেল ডে।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :