চা ও কফি সবার পছন্দের একটি পানীয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে চায়ের কাপে চুমুক দেয়া বা নাশতার পর এক কাপ চা, দুপুরে লাঞ্চের পর বা সন্ধ্যায় স্ন্যাকসের পর চা বা কফিতে চুমুক দেয়া অনেকেরই আবার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
চা বা কফি যেটাই পান করা হোক না কেন, এ নিয়ে অনেকের মধ্যে আবার প্রশ্ন রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, চা পান করা ভালো। আবার কেউ কেউ যুক্তি দেখিয়ে থাকেন কফির পক্ষে। আসলে কোনটি ভালো, এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মী। এবার তাহলে এ বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।
এ পুষ্টিবিদের মতে, চা ও কফি দুটোতেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা কমানো বা স্থিতিশীল রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। একইসঙ্গে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যালস দূর করে থাকে। দুটি পানীয়ই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে। চা ও কফিতে ক্যাফেইন থাকে প্রচুর। ক্যাফেইন পারকিনসন্স নামক মস্তিষ্কের রোগ প্রতিহতের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত কাজ করে থাকে।
এছাড়া চা ও কফি দুটি পানীয়ই আপনার ক্লান্তিভাব দূর করে থাকে এবং শরীর ও মনকে করে তোলে সতেজ। আবার গ্রিন টি ও কফি নিয়মিত পানের ফলে ব্রেস্ট ও প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধ করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক করে। একইসঙ্গে কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধেও দারুণ ভূমিকা পালন করে।
চা না কফি, কোনটি এগিয়ে: দুটি পানীয়েরই প্রায় একইরকম গুণাগুণ থাকলেও এর পুষ্টিগুণের কার্যকারীতা নির্ভর করছে আপনার খাওয়ার ধরনের ওপর। র চা, ব্ল্যাক কফি, গ্রিন টি পানে শরীর সবসময় ভালো থাকে। আবার চা ও কফির সঙ্গে যখন দুধ মিশিয়ে পান করা হয়, তখন এটি উপকারের থেকে ক্ষতিই বেশি করে।
সাধারণত বাজারে বা কফি শপে বিভিন্ন প্রসেসে চা ও কফি পাওয়া যায়। যা স্বাদে অনন্য। কিন্তু সেসব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আবার সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেরই খালিপেটে চা ও কফি পানের অভ্যাস। এটি মোটেও উচিত নয়। এতে ক্ষতি হয়। সাধারণত খাবার খাওয়ার ৩০-৪০ মিনিট পর চা ও কফি পান করা উচিত। ক্যাফেইন সমৃদ্ধ হওয়ায় ঘুমের আগেই চা ও কফি পান করা ঠিক নয়। এতে ঘুমে সমস্যা হবে।
চা ও কফি দুটি পানীয়েরই পুষ্টিগুণ থাকলেও ক্যাফেইনের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে পুষ্টিগুণ। চায়ের থেকে তুলনামূলক দ্বিগুণ মাত্রায় ক্যাফেইন থাকে কফিতে। এ জন্য যারা তাৎক্ষণিক শরীর ও মন চাঙা করতে চান তারা কফি পান করতে পারেন। আর যদি দীর্ঘক্ষণ মন ভালো রাখার কারণ খুঁজেন, তাহলে চা পান করতে পারেন। এ ছাড়া জ্বর ও কাশিজনিত সমস্যা হলে লেবু চা পান করতে পারেন। তবে এর সঙ্গে চিনি ও দুধ মেশানো যাবে না। আর যদি শরীর উষ্ণ রাখতে চান, তাহলে বেছে নিতে পারেন কফি।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :