বাংলাদেশে প্রায় বিভিন্ন প্রজাতির সাপ রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই বিষাক্ত নয়। তবে কিছু রয়েছে যারা অত্যন্ত বিষাক্ত। তাই সময়মতো সাপের কামড়ের চিকিৎসা করলে অল্প সময়েই সুস্থ হওয়া যায়।
আমাদের দেশে থাকা সাপের মধ্যে সাত থেকে আট প্রজাতির অত্যন্ত বিষধর। এদের কামড়ে মানুষ মারা যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। মূলত দেশের গ্রামাঞ্চলেই সাপের উপদ্রব ও সাপের কামড়ে মানুষের মারা যাওয়ার সংখ্যা বেশি। বিষাক্ত সাপের প্রজাতির মধ্যে রয়েছে শঙ্খচূড় বা রাজ গোখরা, কেউটে বা গোখরা, চন্দ্রবোড়া, শঙ্খিনী ইত্যাদি। বিষহীনদের তালিকায় রয়েছে জলঢোড়া, দাঁড়াশ।
সাপের বিষের অন্যতম উপাদান হল প্রোটিন ও এনজাইম। এই এনজাইম মানুষের শরীরে প্রবেশ করে লোহিত কণিকাকে ভেঙে ফেলে। যার ফলে রক্তচাপ ভীষণভাবে কমে যায়। পেশি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এছাড়াও নিউরোটক্সিন নামের পদার্থ থাকে যা অত্যন্ত বিষাক্ত।
সাপের বিষ শরীরে ঢুকলে শরীর আস্তে আস্তে অবশ হতে থাকবে। যেখানে সাপ কামড়েছে তা প্রবল জ্বালা করতে শুরু করবে। আর এই জ্বালা বাড়তে থাকবে। ক্ষতস্থান ক্রমাগত ফুলে উঠবে। আশেপাশের সমস্ত কিছু ঝাপসা দেখতে শুরু করবেন। ঢোক গিলতে গেলে অসুবিধা হবে। মাথাঘোরা, বমি ভাব থাকবে।
বিষধর সাপ কামড়ালে করণীয়:
সবার আগে সাপের কামড় খাওয়া মানুষকে আশ্বস্ত করবেন। সাপের কামড় মানেই মৃত্যু নয়, তা বোঝাতে হবে। ক্ষতস্থান খুব সাবধানে পরিষ্কার ভেজা কাপড় বা জীবাণুনাশক লোশন দিয়ে মুছে দেবেন।
শরীরের বাকি স্থানে যাতে বিষ ছড়াতে না পারে, তার জন্য ক্ষতস্থানের উপরের অংশ বেঁধে দিতে হবে। রোগীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাছের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সম্ভব হলে কোন প্রজাতির সাপ কামড়েছে। তা জানার চেষ্টা করবেন।
সাপের বিষ শরীরে প্রবেশ করলে কী কী করবেন না?
- ‣ ক্ষতস্থানটি বেশি নড়াচড়া করবেন না। এতে বিষ দ্রুত ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
‣ ধারাল অস্ত্র দিয়ে কেটে ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত করানোর চেষ্টা করবেন না।
‣ চুষে বিষ বের করার চেষ্টাও কখনও করবেন না।
‣ অ্যাসিড জাতীয় কিছু জিনিস দিয়ে ক্ষতস্থান পোড়ানোর চেষ্টা করবেন না।
‣ ক্ষতস্থানে চুন বা গাছ-গাছড়ার রসও দেবেন না।
‣ জোর করে বমি করানোর চেষ্টা করানোও উচিত নয়।
‣ বিষধর হোক বা বিষহীন, সাপের কামড় খেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। অযথা ভয় পাবেন না বা না জেনে নিজে নিজে চিকিৎসা করতে যাবেন না।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :