খাবার টেবিলে বসিয়ে নিজের হাতে খেতে শেখানো খুব জরুরি, শিশুর বয়স দু’বছর পেরিয়ে গেলে তখন সকলের সঙ্গে বসিয়ে দিবেন খাবার টেবিলে । কোন থালায় খাবে, চামচ-ছুরি-কাঁটা চামচের সঠিক ব্যবহার একটু একটু করে শেখালে পরে গিয়ে কোনও সমস্যাই হবে না।
টেবিলে বসে খাওয়া, খাওয়ার টেবিলের আদবকায়দা ছোট থেকেই শেখালে শিশু স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। সন্তানকে স্বনির্ভর, আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে উদ্যোগী মা-বাবাকেই হতে হবে। শিশুর বয়স দু’বছর পেরিয়ে গেলে তখন সকলের সঙ্গে খাওয়ার টেবিলে বসিয়ে নিজের হাতে খেতে শেখানো খুব জরুরি। কোন থালায় খাবে, চামচ-ছুরি-কাঁটা চামচের সঠিক ব্যবহার একটু একটু করে শেখালে পরে গিয়ে কোনও সমস্যাই হবে না। খাওয়া নিয়েও বায়না করবে না শিশু। সকলের সঙ্গে বসে খেলে আর মোবাইল বা গ্যাজেটও চাইবে না।
মনোবিদের মতে, ‘‘শিশুর মন বুঝতে হবে। যদি খেতে না চায়, তা হলে জোর করে খাওয়ানো ঠিক নয়। নিজেরা যখন খেতে বসছেন, তখন খুদেকে সঙ্গে নিয়ে বসুন। নিজের হাতে খেতে শেখান। খাবার খাওয়া কিন্তু পড়তে বসা নয়। খুদে যেন খেতে বসতে ভয় না পায় সে দিকেও লক্ষ রাখতে হবে।’’
শিশুকে আলাদা ঘরে খাওয়ালে কোনও দিনই আদবকায়দা শিখবে না। তাই প্রথম থেকেই বাড়ির সকলের সঙ্গে তাকে টেবিলে বসতে শেখানো জরুরি। খুব উঁচু খাবার টেবিল হলে তার পাশেই খুদের জন্য আলাদা ছোট ফিডিং চেয়ার বানিয়ে দিন।
সকলে যা খাচ্ছে তা-ই খাওয়াতে হবে শিশুকে। তবে খুদের রান্নাতে তেলমশলা দেবেন না। এতে কোন পদের পর কী খেতে হয়, সন্তান তা বুঝতে শিখবে। প্রয়োজনে প্রতি পদ বা রান্নার বিশেষত্ব, তা কী ভাবে খেতে হয়, শিশুকে গল্পের মতো করে বোঝান। এতে যদি কোনও পদ তার অপছন্দেরও হয়, তা হলেও তা চেখে দেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে। খাবার ধীরে ধীরে কী ভাবে চিবিয়ে খেতে হবে তা-ও শেখানো দরকার শিশুকে। অল্প অল্প করে খুদের থালায় খাবার দিয়ে নিজের হাতে খেতে শেখানো জরুরি। খাবার যেন নষ্ট না হয় তা-ও বুঝিয়ে বলতে হবে শিশুকে।
খাবার টেবিলে মোবাইল নয়, থালা-বাসন, কাঁটাচামচের ব্যবহার শেখাতে হবে। কোন পদে কী ধরনের চামচ ব্যবহার করতে হয়, মিষ্টি কেন আলাদা পাত্রে খেতে হয়, এ সব ছোট ছোট বিষয় শেখাতে থাকলে টেবিলে বসে খাওয়ার আদবকায়দা শিখে যাবে ছোট থেকেই। এর পর কারও বাড়িতে গেলে বা রেস্তোরাঁয় গেলে, নিজে থেকেই সেই নিয়ম মেনে চলবে।
একটু বড় হলে তাকে পরিবেশন করাও শেখাতে হবে। হয়তো বললেন টেবিলে থালা সাজিয়ে দিতে, গ্লাসে জল ভরে দিতে। যে খাবার পরিবেশন করতে ওর সমস্যা হবে না, সেগুলি আগে দিন। ভুল হলে বকাঝকা না করে ধৈর্য ধরে শিখিয়েও দিতে হবে।
খেয়ে উঠে নিজের থালা-বাটি তুলে নিয়ে গিয়ে কোথায় রাখতে হবে, সে অভ্যাসও রপ্ত করানো ভাল। ছেলে হোক বা মেয়ে, কোনও পার্থক্য করলে চলবে না। এতে নিজের কাজ নিজেই করার অভ্যাস তৈরি হবে। ভবিষ্যতে পড়াশোনার জন্য বাইরে কোথাও গিয়ে থাকতে হলে কোনও সমস্যায় পড়তে হবে না। রান্না ভাল লাগলে তার প্রশংসা করাও শেখাতে হবে শিশুকে। এতে খুদের মধ্যে সৌজন্যবোধ তৈরি হবে ছোট থেকেই।
একুশে সংবাদ/আ.প./সাএ
আপনার মতামত লিখুন :